অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

লকডাউন ও বর্জনের মধ্যেই শুরু হল বেইজিং অলিম্পিক


 বেইজিং এ ২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৃত্যশিল্পীরা হালকা লাঠি দিয়ে পারফর্ম করছেন। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
বেইজিং এ ২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৃত্যশিল্পীরা হালকা লাঠি দিয়ে পারফর্ম করছেন। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২।

দুই বছর আগে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়া দেশটিতে, শুক্রবার লকডাউনের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে শুরু হল শীতকালীন অলিম্পিক। এর মধ্য দিয়ে চীন গর্বের সাথে বিশ্বমঞ্চে তাদের প্রতাপ প্রকাশ করলেও, দেশটি তার নিজের লক্ষ লক্ষ জনগণের সাথে যে অন্যায় করে, তার প্রতিবাদে বেশ কিছু পশ্চিমা সরকার এবারের এই আয়োজনকে কূটনৈতিকভাবে বর্জন করেছে।



বেইজিং বিশ্বের প্রথম এমন শহর যেখানে গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন, উভয় অলিম্পিকই আয়োজিত হল। যদিও অনেকেই মহামারীর সময়ে আয়োজিত এই দ্বিতীয় অলিম্পিকে যোগ দিচ্ছেন না, তবু অন্য অনেক বিশ্ব নেতাই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি দিনের শুরুর দিকে শি এর সাথে একটি একান্ত বৈঠক করেন, যখন কিনা অপরদিকে ইউক্রেনের সাথে রাশিয়ার সীমান্তে একটি বিপদজনক মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব।



বেইজিংয়ের জন্য এই অলিম্পিকটি বিশ্বশক্তি হিসেবে খেলায় এবং শক্তিতে তাদের মর্যাদা ও ক্ষমতার স্বীকৃতি। কিন্তু চীনের বাইরে অনেকের জন্যেই, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য, এই আয়োজনটি চীনের ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী শাসনের পথে অগ্রসর হওয়ার বিষয়টাই নিশ্চিত করে।

চীনের কর্তৃপক্ষ গণতন্ত্রপন্থী মোর্চা দমন করে চলেছে, হংকংয়ের উপর তাদের কর্তৃত্ব বাড়িয়ে চলেছে, তাইওয়ানের সাথে আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে এবং দেশটির সুদূর পশ্চিমে মুসলিম উইঘুরদের আটক করে রেখেছে। উইঘুর ‍মুসলিমদের অবদমন করাকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এবং অন্যান্যরা একটি গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।



অলিম্পিক এগিয়ে আসতে থাকলে, ভিন্নমত অবলম্বনকারীদের উপর চীনের দমন আরও প্রকাশ পেতে থাকে যখন, চীনের টেনিস তারকা পেং শুয়েই-কে ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির এক সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত বছর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করার পর এই টেনিস তারকা লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান। তার অভিযোগটি দ্রুতই ইন্টারনেট থেকে সরিয়ে ফেলা হয় এবং এ বিষয়ে আলোচনা ভীষণভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকে।



চীনের সেনা দিয়ে তিয়ানানমেন স্কয়ারে শত শত বা সম্ভবত হাজার হাজার চীনের নাগরিক হত্যা করে, গণতন্ত্রকামী মিছিল দমনের তিন দশক পর, দেশটির সরকার সেখানকার ১০ লক্ষেরও বেশি সংখ্যালঘু মানুষকে আটক করে রেখেছে, যাদের বেশিরভাগই দেশটির সুদূর-পশ্চিমের শিনজিয়াং অঞ্চলের উইঘুর মুসলিম। তাদেরকে বন্দী শিবিরে আটক রাখা হয়েছে। পরিস্থিতিটিকে মানবাধিকার সংস্থাগুলো “গণহত্যার খেলা” হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।



দেশটির এমন সব আচরণের কারণে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা সহ আরও অন্যান্য দেশ এবারের এই অলিম্পিকের আসরটিকে কূটনৈতিকভাবে বর্জন করেছে, কারণ তারা নিজেদের চীনের এমন নেতাদের পাশে দেখতে চান না। তবে দেশগুলো তাদের প্রতিযোগীদের অংশগ্রহণের অনুমতি দিয়েছে।

XS
SM
MD
LG