বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করে আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত প্রশ্নে রুলের ওপর ২২ ফেব্রুয়ারি শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
নিপুণের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানির এই তারিখ ধার্য করেন।
আদালতে নিপুণের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। জায়েদ খানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ন, আহসানুল করিম ও নাহিদ সুলতানা যুথি।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জানুয়ারি শুক্রবার চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে পরদিন শনিবার ভোরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহিদুল হারুন এফডিসিতে ফলাফল ঘোষণা করেন। ফলাফলে গত দুই মেয়াদে শিল্পী সমিতির সভাপতি থাকা মিশা সওদাগরকে ৪৩ ভোটে হারিয়ে এবার সভাপতি হন ইলিয়াস কাঞ্চন। আর সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের কাছে ১৩ ভোটে হারেন ইলিয়াস কাঞ্চনের প্যানেলের প্রার্থী নিপুণ আক্তার।
কিন্তু অর্থ দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ এনে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে জায়েদ খান ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর পদ বাতিলের আবেদন করেন নিপুণ। সে আবেদনে বিষয়ে নির্বাচনী আপিল বোর্ডকে সিদ্ধান্ত নিতে সমাজসেবা অধিদপ্তর চিঠি দেয়। এরপর গত ৫ ফেব্রুয়ারি জায়েদ খান ও চুন্নুর বিষয়ে বৈঠকে বসে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনী আপিল বোর্ড। বৈঠকে শেষে বোর্ডের প্রধান ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল বলে সাধারণ সম্পাদক পদে নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করেন। এই ঘোষণার পরদিন ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ পরিষদের বিজয়ীরা শপথ নেন।
তবে নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা এবং নিজের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন জায়েদ খান। সে রিটের শুনানি নিয়ে ওই দিনই বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনী আপিল বোর্ড কর্তৃক জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। সেই সঙ্গে জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে বিজয়ী ঘোষণার বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করা হয়। রুলের ওপর ১৫ ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে গত ৭ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগে আবেদন করে নিপুণ। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে বিষয়টি প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। সেই সঙ্গে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দুজনের কেউই দায়িত্ব পালন করতে পারবে না মর্মে (স্ট্যাটাসকো) আদেশ দেওয়া হয়।
এরপর সে অনুযায়ী সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) আপিল বিভাগ এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে হাইকোর্টকেই তাদের জারি করা রুলটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। রুল নিস্পত্তির আগ পর্যন্ত চেম্বার আদালতের দেওয়া আদেশই বহাল থাকবে বলে নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। সে পর্যন্ত দুজনের কেউ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।