নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গঠনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর একটি যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পাঁচ দিনব্যাপী এই মহড়া চলবে আগামী ২০ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ও সিলেটে। বলা হয়েছে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার লক্ষ্যে এই মহড়ার উদ্দেশ্য বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর আন্তঃকার্যক্ষমতা উন্নত করা এবং দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে আধুনিকায়নে সমর্থন দেয়া।
বিএএফ কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্ট ও সিলেটের অপারেটিং লোকেশন- আলফায় 'কোপ সাউথ-২২' মহড়ায় অংশ নেবে জাপানের ইয়াকোতা এয়ারবেস ৩৭৪তম এয়ারলিফট উইংয়ের সদস্যরা। প্যাসিফিক এয়ারফোর্সেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৌশলগত দিক থেকে মানুষ বা পণ্য অবতরণের অংশ হিসেবে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩০০ সদস্য, বাংলাদেশ সি-১৩০ জে'র দুটি বিমান। তাদের সঙ্গে যোগ দেবে যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহিনীর ৭৭ জন সদস্য ও দুটি এয়ারফোর্স সি-১৩০ জে সুপার হারকিউলিস। যুক্তরাষ্ট্রের এসব সদস্য ও বিমান যুক্ত হবে ৩৬তম এয়ারলিফট স্কোয়াড্রন থেকে। এতে থাকবে এয়ারক্রাফট তৈরি ও পুনরুদ্ধার, দিনের বেলা নিম্নস্তরে নেভিগেশন এবং কৌশলগতভাবে মানুষ বা মালপত্র নামানো। একই সাথে থাকবে অপারেশন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং কর্মক্ষেত্রে ক্যারিয়ার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ বিনিময়।
এই মহড়া প্রসঙ্গে ৩৬তম এয়ারলিফট স্কোয়াড্রনের ডিরেক্টর অব অপারেশনস লেফটেন্যান্ট কর্নেল কিরা কফি বলেছেন, "বাংলাদেশ বিমানবাহিনী আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক অংশীদারদের মধ্যে একটি এবং কোপ সাউথ আমাদেরকে কৌশলগত এয়ারলিফট সর্টিজ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ বিনিময়ের মাধ্যমে এই অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করার সুযোগ দিয়েছে।" লেফটেন্যান্ট কর্নেল কিরা কফি আরও বলেন, "আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য হচ্ছে- অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক গড়া। এজন্য আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার উন্নতি খুবই জরুরি। করোনা মহামারির পর এবারই প্রথম শুরু হচ্ছে কোপ সাউথ।"
লেফটেন্যান্ট কর্নেল কফি জানান, "শক্তিশালী এক 'মানবিক সহায়তা এবং দুর্যোগ ত্রাণ' পরিস্থিতির সময়ে একসঙ্গে কাজ করতে আমাদের সক্ষমতাকে ত্বরান্বিত করেছে কোভিড-১৯। ২০২০ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে ১২১ মিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে।"
২০১৯ সালের ১১ জুন বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর একটি যৌথ বিবৃতি দেয়। এতে দুই দেশের তরফে স্থায়ী অংশীদারিত্বের প্রতি অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। এছাড়া নিরাপত্তা, উন্নয়ন, মানবিক সহায়তা, দুর্যোগে ত্রাণ এবং সন্ত্রাস মোকাবিলায় ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ওপর জোর দেয়া হয়। দুই সরকার একটি অবাধ ও উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ এবং নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক গড়ায় একমত হয়।