অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কাবুল সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করলো তালিবান 


.কাবুলে পাহারারত এক তালিবান যোদ্ধা, ২২শে ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ছবি/সাহেল আরমান/এএফপি
.কাবুলে পাহারারত এক তালিবান যোদ্ধা, ২২শে ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ছবি/সাহেল আরমান/এএফপি

আফগানিস্তানের তালিবান সরকার সোমবার দ্ব্যর্থহীনভাবে তাদের সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সমালোচনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ঐ সমালোচনায় যুক্তরাষ্ট্র বলেছিলো যে কাবুলের একমাত্র পুরুষ-শাসিত সরকারে রয়েছে“এক জাতিগোষ্ঠীর প্রাধান্য” এবং অন্তর্ভুক্তির অভাব।

আফগানিস্তান বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি, টম ওয়েস্ট এর সমালোচনামূলক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদকে জিজ্ঞাসা করা হলে, ভয়েস অব আমেরিকাকে তিনি বলেন, "এই মন্তব্য যথার্থ নয় এবং আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি"।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, "আমাদের সরকারে আমাদের সমাজের সকল চাহিদা ও মূল্যবোধকে আমরা বিবেচনায় রেখেছি"।

শনিবার, টম ওয়েস্ট জার্মানিতে আন্তর্জাতিক এক নিরাপত্তা সম্মেলনে বলেন, নারীদের শিক্ষার অধিকার এবং জীবিকার প্রতি শ্রদ্ধা নিয়ে তালিবানের সঙ্গে তাঁর সেই আলোচনা ফলপ্রসু ছিল তবে প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের প্রশ্নে তিনি তাদের কঠোর অবস্থান নিতে দেখেন।

তালিবান মূলত আফগানিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ, পাশতুন জাতিগোষ্ঠীর লোক এবং তাদের অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভা ঐ গোষ্ঠীর প্রবীণ নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত। তাদের মধ্যে রয়েছেন তারাও যারা সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞায় আওতায় ছিলেন।

তালিবান ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের পূর্বতন সরকারে মেয়েদের পড়াশোনা ও কাজ-কর্ম নিষিদ্ধ করেছিল। ৬ মাস আগে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর কট্টরপন্থী দলটি নারীদের ওপর কতকগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যেমন তাদেরকে হিজাব পরিধান করতে হবে এবং দূরের পথ যাত্রায় শুধুমাত্র নিকট কোনো পুরুষ আত্মীয়কে নিয়ে তারা ভ্রমণ করতে পারবেন।

তবে তালিবান সরকার ছাত্রীদের জন্য বেসরকারি ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিয়েছে এবং মার্চের শেষ নাগাদ স্কুল ছাত্রীদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা বিলম্বের জন্য আর্থিক অসুবিধা ও দীর্ঘসুত্রিতাকেদায়ী করে, কারণ ছাত্রীদের শারিয়া মেনে ক্লাস শুরু করতে সময়ের প্রয়োজন।

টম ওয়েস্ট শনিবার জোর দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক প্রত্যাশা পূরণে তালিবানকে অনুরোধ জানাতে ওয়াশিংটন শুধু একা নয়, চীন, ইরান ও রাশিয়াসহ পার্শবর্তী দেশগুলোও এই আবেদনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। পাকিস্তান আফগানিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘ এক সীমান্ত ভাগাভাগি করে এবং ঐতিহ্যগতভাবে তালিবানের সঙ্গে তাদের রয়েছে ঘনিষ্ঠ এক সম্পর্ক।

যদিও জার্মানিতে সম্মেলনে টম ওয়েস্টের পাশে দেয়া ভাষণে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মুয়ীদ ইউসুফ বলেন, বহু বছরের লড়াই ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত দেশ আফগানিস্তানকে পরিত্যাগ করলে সেখানকার মানবিক পরিস্থিতি আরো বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াবে।

ইউসুফ তালিবানের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে কাবুলের সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্ক রক্ষার সমর্থনে বলেন, আফগানিস্তানে বহু দশকের সংঘাত পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্বার্থকে বিঘ্নিত করেছে। আফগান সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষ লক্ষ শরণার্থীদের পাকিস্তান আশ্রয় দিয়েছে।

XS
SM
MD
LG