অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে ঢাকার বইমেলায় প্রতিবাদ


ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে ঢাকার বইমেলায় প্রতিবাদ
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে ঢাকার বইমেলায় প্রতিবাদ

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হামলায় গোটা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ প্রতিবাদে সরব হয়েছে। এই হামলার আঁচ বাংলাদেশে এসেও লেগেছে।

দিনভর ঢাকার চায়ের দোকান, রেস্তোরাঁ, রাস্তাঘাটে সবখানেই এই আলোচনা। এর ঢাকার অমর একুশে বইমেলায় রাশিয়ার এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখা গেল।

শুক্রবার দুপুরে একুশে বইমেলার লিটল ম্যাগ চত্ত্বর এলাকা একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। এর মিছিলটি মেলার গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রদক্ষিণ করে লিটল ম্যাগ চত্ত্বরে শেষ হয়। পরে সন্ধ্যায় অনিন্দ্য প্রকাশ ও শ্রাবণ প্রকাশনের সামনে কয়েকজনকে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায়।

এই প্রতিবাদ মিছিলটি মূলত আবিষ্কার প্রকাশনীর তরফ থেকে শুরু করা হলেও পরে লেখক ও সাধারণ পাঠকরাও এসে যোগ দেন বলে জানালেন প্রকাশনা সংস্থাটির কর্ণধার দেলোয়ার হাসান। তিনি বললেন, "পৃথিবীর যে প্রান্তেই মানবতা লঙ্ঘন হবে আমি প্রতিবাদ করবো।...এখানে প্রশ্নটা মানবিকতা, বিবেকবোধের- সাধারণ মানুষের এই বোধ জাগ্রত করার দায়িত্ব আমরা যদি না নিই তাহলে কে নেবে।"

প্রতিবাদের পূর্বে ফেসবুকে একটি ঘোষণা দিয়েছিলেন দেলোয়ার হাসান। অনেকেই অংশ নিতে চেয়েছিলেন, দূরত্বের কারণেই অনেকে আসতে পারেননি বলে আফসোস প্রকাশ করেছেন- এমনটাই জানিয়ে তিনি বলেন, "আমরা যখন প্রতিবাদ শুরু করে মিছিল নিয়ে যেতে থাকি, তখন অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়। কবি, লেখক ও পাঠকরাও ছিলেন এই তালিকায়।"

রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন কবি শিউলি রাজ্জাক তমা। তার এবারের বইমেলায় "মন বলে দেয়" নামের একটি কবিতার বই এসেছে। ভয়েস অফ আমেরিকাকে তমা বলছেন, "প্রতিবাদ তো ভেতর থেকে আসা বিষয়। গোটা বিশ্বে আমরা শান্তি চাই, যুদ্ধ হানাহানি কে চায় বলুন, ...পৃথিবীর বিবেককে জাগ্রতের জন্য বইমেলায় আমরা প্রতিবাদ করেছি। আমরা চাই পৃথিবীর সকল মানুষ এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলুক।"

এই প্রতিবাদ দেখে বেশ অবাক হয়েছেন বইমেলায় আগত দর্শনার্থী বদরুল হাসান। তিনি বললেন, "বইমেলায় কয়েকজন মানুষ মিলে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। লেখক সাহিত্যিকরা করবেন এটা স্বাভাবিক। তবে বইমেলায় এই প্রতিবাদ ছোট হলেও আমি অবাক হয়েছি, তাদের পেছনে পেছনে হেঁটেছি। এভাবেই অল্প অল্প করে মানুষের প্রতিবাদ নিশ্চই দীর্ঘ মিছিলে পরিণত হবে।"

এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় একদল লেখক, সাহিত্যিক প্রকাশক ও অ্যাক্টিভিস্ট মেলার অনিন্দ্য প্রকাশ ও শ্রাবণ প্রকাশ এলাকায় প্ল্যাকার্ড হাতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এসময় এক স্বল্প পরিসরের সমাবেশে রাশিয়ার সমালোচনা করে দ্রুত যুদ্ধ বন্ধের আহবান জানিয়েছেন তারা।

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে ঢাকার বইমেলায় প্রতিবাদ
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে ঢাকার বইমেলায় প্রতিবাদ

এই সমাবেশে প্রকাশক ও লেখক রবিন আহসান বলেন, "রাশিয়া একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে ইউক্রেন দখল করতে গেছে। আজ ইউরোপে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে তা ক্রমেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে যাবে। সাম্রাজ্যবাদীদের এই অপতৎপরতা দ্রুত বন্ধ করতে হবে।"

আইনজীবী ও অ্যাক্টিভিস্ট জীবনানন্দ জয়ন্ত কঠোর ভাষায় রুশ আগ্রাসনের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, "সারা পৃথিবী যখন করোনা মোকাবিলায় ব্যস্ত, সারা পৃথিবী যখন পুরোপুরি করোনার টিকা পায়নি ঠিক তখনই রাশিয়া একমাস ধরে যুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরি করে যুদ্ধ শুরু করেছে। যখন এইসব সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র যখন জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলে তখন তারা যুদ্ধ করে সেই জনপ্রিয়তা অর্জন করার চেষ্টা করে।"

গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় কর্মী আকরামুল হক বলেন, "অস্ত্র বাণিজ্যের অংশ হিসেবে এই যুদ্ধ। মহামারী পরবর্তী এই যুদ্ধ অনিবার্য নয়, যুদ্ধ এড়ানো উচিত৷ পুতিন নিজের দেশকে যেমন গলা টিপে ধরেছে তেমনই ইউক্রেনকেও গলা টিপে ধরেছে।"

XS
SM
MD
LG