অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় পোশাক রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে


বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে একটি গার্মেন্টস কারখানায়, কাজ করছেন কর্মীরা। ৯ আগস্ট, ২০২১।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে একটি গার্মেন্টস কারখানায়, কাজ করছেন কর্মীরা। ৯ আগস্ট, ২০২১।

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার জেরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর দেয়া নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের তৈরি-পোশাক রপ্তানি বাজারে।

রাশিয়ার ব্যাংকগুলোকে সুইফট ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার আলোচনা শুরু হওয়ায় দেশটিতে তৈরি পোশাক রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।

তারা বলছেন, সুইফট থেকে রাশিয়ার ব্যাংকগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে তৈরি পোশাকের মূল্য পরিশোধে জটিলতা তৈরি হবে। এজন্য আগাম সতর্কতার অংশ হিসেবে রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি -বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে সদস্য কারখানা মালিকদের এ বিষয়ে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সুইফট বন্ধের আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় রাশিয়ান ক্রেতাদের কাছ থেকে নতুন করেরপ্তানি অর্ডার যাতে না নেয়া হয়।এছাড়া নতুন করে কোন শিপমেন্টও হচ্ছে না বলে বিজিএমইএ সূত্র জানিয়েছে।

রাশিয়া বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের নতুন এবং সম্ভাবনাময় একটি বাজার।গত কয়েক বছর ধরে রাশিয়ায় পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। ইউক্রেনেও বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানি হয়।তবে রপ্তানির পরিমাণ কম।

সরাসরি এবং তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে রাশিয়ায় বছরে ১ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়ে থাকে বলে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

সংগঠনের সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম জানিয়েছেন, রাশিয়াতে সরাসরি সাড়ে ৬০০ মিলিয়ন ডলারের পোশাক যায় বাংলাদেশ থেকে। আর ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মাধ্যমে যায় আরও সাড়ে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের।সবমিলিয়ে অন্তত ১ বিলিয়ন ডলারের পোশাক যায় রাশিয়াতে।

সদস্য কারখানা মালিকদের রাশিয়ায় পণ্য না পাঠানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুদ্ধ এবংসম্ভাব্য সুইফট বন্ধের কারণে চালান পাঠানো ও পেমেন্ট পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো’র তথ্য অনুযায়ী গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত রাশিয়ায় রপ্তানি হয়েছে ৪১৫ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলারের পোশাক।যা গত বছরের তুলনায় ৩৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউজ এসোসিয়েশনের (বিজিবিএ) সভাপতি কাজী ইফতেখার হোসেন জানিয়েছেন, রাশিয়ায় বাংলাদেশের পোশাকের বাজার খুব বড় না হলেও একেবারে কম না।কারণ সেখানে নিটওয়্যারের প্রচুর রপ্তানি আছে। রাশিয়ায় যাওয়ার জন্য ইউরোপের ট্রানজিট নিতে হয়।সেই ট্রানজিট যদি না হয় তাহলে পোশাক খাত হুমকির মুখে পড়বে। তিনি বলেন, "রাশিয়াতে তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে রপ্তানি করতে হয়।সুইফট যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে পেমেন্ট করা যাবে না।আর পেমেন্ট বন্ধ থাকলে রপ্তানি এমনিতেই বন্ধ করতে হবে।"

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র।বার্ষিক রপ্তানির ৬৪ শতাংশই যায় ইউরোপের দেশগুলোতে।

XS
SM
MD
LG