ব্যাংকক — শত শত সাংবাদিক গ্রেপ্তার, অন্তত দুজন নিহত এবং বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম নিষিদ্ধ। মিডিয়ার উপর এমনি আতঙ্কজনক হারে দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা।
এছাড়া, দেশজুড়ে মিলিশিয়ারা সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলায়, মিয়ানমারে রিপোর্টিং আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
স্বাধীন সাংবাদিকদের যে ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে, তা মিয়ানমারের একদল চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং ব্যাংককে বসবাসকারী সাংবাদিকদের দ্বারা নির্মিত একটি নতুন চলচ্চিত্রে তুলে ধরা হয়েছে।
ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংককের রাজধানী থাইল্যান্ডের ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাবের একটি প্রদর্শনীতে পরিচালক ও সাংবাদিক অং নাইং সোয়ে বলেছিলেন, “আমরা সাংবাদিক, আমরা গল্পকার, আমাদের এখনও আমাদের কাহিনী নিয়ে কথা বলতে হবে, এমন ধারণা থেকেই চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে।”
তার ফিল্ম, ওয়াকিং থ্রু দ্য ডার্কনেস, পাঁচজন সাংবাদিককে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে। এর প্রেক্ষাপট শুরু হয়েছে ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ থেকে, যখন মিয়ানমারে বেসামরিক শাসনের উৎখাত, গণবিক্ষোভ এবং বিরোধী শক্তির সাথে সংঘর্ষের ঘটনাগুলি তারা কাভার করতে শুরু করে।
ফিল্মে প্রদর্শিত প্রায় সকলেই বেনামিতে উপস্থিত হয়, কারণ তারা এখনও দেশের ভিতর থেকে রিপোর্ট করছে।
পর্যবেক্ষণ গ্রুপ রিপোর্টিং আসিয়ান বলছে, মিয়ানমারের মিডিয়ার জন্য কারাগার একটি বড় ঝুঁকি। কারণ সেখানে অভ্যুত্থান শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ১২০ জনেরও বেশি সংবাদকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ৪৭ জন এখনও হেফাজতে রয়েছে।
ফিল্মে প্রদর্শিত সাংবাদিকদের একজন বলেছেন, “অভ্যুত্থানের আগে আমরা যেভাবে কাজ করতে পারতাম, তার থেকে বর্তমান সময়টা স্পষ্টতই আলাদা। একজন সাংবাদিক হিসেবে আমি সবসময় আমার ব্যাগে ক্যামেরা রাখতাম। কিন্তু এখন আমরা আমাদের সাথে ক্যামেরা নিতে সাহস করি না। আমাদের শুধুমাত্র মোবাইল ফোন ব্যবহার করেই সব কাজ করতে হচ্ছে।
মিয়ানমারের সংসদের খুব কাছে একটি ড্রোন উড্ডয়নের অপরাধে ২০১৭ সালে দুই মাসের জন্য কারাগারে বন্দী থাকতে হয়েছিল সংবাদকর্মী অং নাইং সো কে।
তিনি বলেন, "মিয়ানমারে বিশেষ করে ২০১২-২০২০-এর মধ্যে আমরা তুলনামূলকভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কিছুটা হলেও পেয়েছি। (কিন্তু) আমরা পূর্ণ সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য অনেক আগে থেকেই লড়াই করে আসছিলাম। তবে এই সময়টা মিয়ানমারের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ সময়।”
মিডিয়ার প্রতি যাঁরা নজরদারি করছেন তাঁরা একমত। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) বলেছে, সামরিক অভ্যুত্থান মিয়ানমারে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ১০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে।