বাংলাদেশের আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে ঢাকার বনানী থানায় দায়ের করা মাদক মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ছয় সপ্তাহের জন্য এই স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। এই আদেশের ফলে এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। পরীমনির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না।
এর আগে গত ১ মার্চ বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মাদক মামলার কার্যক্রমের ওপর তিন মাসের স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করেছিলেন। রুলে এ মামলা কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন জানায়।
গত ৫ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ১০–এর বিচারক নজরুল ইসলাম তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বিচার শুরু হওয়া অপর দুই অভিযুক্ত হলেন-পরীমনির সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দিপু ও মো. কবীর হাওলাদার।
পরে পরীমনি গত ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্টে এ মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। হাইকোর্ট গত ১ মার্চ মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করেন। ওই একই দিন বিচারিক আদালতে এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ অগাস্ট ঢাকার বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে তাকে গুলশান থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত ৩১ অগাস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত পরীমনির অন্তর্বতীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। এ মামলায় ৪ অক্টোবর পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযোগপত্র দাখিলের পর ১০ অক্টোবর পরীমনি ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির হয়ে পুনরায় জামিন নেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পরীমনির বাসা থেকে জব্দ করা মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সিআইডিকে জানানো হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমনির নামে মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। গত বছরের ৩০ জুন ওই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। পরীমনি এ মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পরীমনি তার গাড়িটি মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন।