অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশের এক কোটি মানুষ নিত্যপণ্য কিনতে বিশেষ কার্ড পাবেন—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। (ছবি- ইউএনবি)

বাংলাদেশ সরকার এক কোটি মানুষকে বিশেষ কার্ড দেবে, যাতে তারা কম দামে কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারেন। এ কথা বলেছেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের এক সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার এই ব্যবস্থা নিচ্ছে।”

তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে ১০ টাকা কেজি টাকা দরে চাল কেনার কার্ড দেওয়া হয়েছে। আমরা সেই ৫০ লাখ মানুষ এবং আরও এক কোটি মানুষকে বিশেষ কার্ড দিয়ে সহায়তা করব, যাতে তারা ন্যায্য মূল্যে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন।”

শেখ হাসিনা বলেন, “করোনা মহামারি চলাকালে সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়া ৩৮ লাখ লোককে এ্ই এক কোটির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।”

সরকারের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের কাছে এখনো ১৮ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ আছে এবং এ ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।”

ফসল উৎপাদন বাড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের খাদ্যের চাহিদা মেটানোর জন্য এক টুকরো জমিও অনাবাদি রাখা উচিত নয়।”

শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজে গতি আনার আহ্বান

রাজধানী ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণের নির্মাণকাজে গতি আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার সকালে শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ কাজের অগ্রগতি (প্রথম পর্যায় ও প্রথম সংশোধিত) উপস্থাপনা প্রত্যক্ষ করে এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কাজ করতে বলেছেন শেখ হাসিনা। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি অন্য প্রয়োজনীয় বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ কাজের সার্বিক অগ্রগতি ২৩ শতাংশ এবং ২০২৩ সালের নভেম্বরের মধ্যে কাজটি শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

এ সময় বাংলাদেশ বিমানের আয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পরামর্শও দেন।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মোকাম্মেল হোসেন এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাঙালি জাতির মাথা উঁচু করে চলার স্লোগান “জয় বাংলা”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (১৪ মার্চ) বলেছেন, দেশের সকল অর্জনের মূলে থাকা “জয় বাংলা”–কে সরকার জাতীয় শ্লোগান ঘোষণার মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বকে এই বার্তাই পৌঁছে দিতে চেয়েছে যে, বাঙালি মাথা নিচু করে নয় বরং মাথা উঁচু করেই চলবে।

তিনি বলেন, “মাথা নত করে আমরা চলি না, চলব না। বিজয়ীর বেশে মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে প্রতিটি বাঙালি যে যেখানে থাকে, সে মাথা উঁচু করে চলবে। বাঙালি জাতির মাথা উঁচু করে চলার স্লোগান এই জয় বাংলা।”

স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দীপক স্লোগান জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা উপলক্ষে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) আয়োজিত “জয় বাংলা উৎসব” শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার বনানীর হোটেল শেরাটনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, “জয় বাংলা আমাদের মুক্তি সংগ্রামের স্লোগান। জয় বাংলা মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। জয় বাংলা আত্মত্যাগের স্লোগান। যে স্লোগানের মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি।”

তিনি বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন ছয় দফা দিলেন, তখনই তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন জয় বাংলাকে মাঠে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমরা তখন ছাত্রলীগের কর্মী। আমাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ নির্দেশনার অন্তর্নীহিত কারণ ছিল সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানুষের ভেতর স্বাধীনতার চেতনাকে জাগ্রত করা। উদ্বুদ্ধ করা।”

শেখ হাসিনা বলেন, “এ স্লোগানের মাধ্যমেই আমাদের সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং বিজয় অর্জন। প্রতিটি পদক্ষেপ তিনি নিয়েছিলেন সুপরিকল্পিতভাবে। যে কারণেই আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি, মর্যাদা পেয়েছি। জয় বাংলার মধ্য দিয়ে এটাই আমরা বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছাতে চাই, আমরা বিজয়ী জাতি, আমরা বিজয় অর্জন করেছি।”

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসকে দেশের প্রতিটি দুর্যোগে স্বতস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসার পাশাপাশি জয় বাংলা স্লোগান উদযাপনের এ উৎসবটি আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বক্তব্য দেন।

XS
SM
MD
LG