রাশিয়ার সামরিক কর্মকর্তারা শনিবার জানিয়েছেন যে, তারা ইউক্রেনে প্রথমবারের মত হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছেন। তাদের ভাষ্যমতে, দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের একটি ভূগর্ভস্থ অস্ত্র গুদাম ক্ষেপণাস্ত্র হামলাটির লক্ষ্যবস্তু ছিল।
কিনজাল নামের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মাক ৯ গতিবেগে (শব্দের গতির চেয়ে ৯ গুণ বেশি গতি) উড্ডয়নে সক্ষম। এই বিপুল গতির কারণে তারা ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সনাক্ত হওয়া এড়াতে সক্ষম বলে ধরে নেওয়া হয়। ২০১৯ সালে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো তৈরির সময়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এগুলোকে “অপরাজেয়” হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক শনিবার বলে, “হাইপারসনিক অ্যারো-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সম্বলিত কিনজাল এভিয়েশন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাটি, ইভাঙ্কো-ফ্র্যানকিভস অঞ্চলের দেলিয়াতিন গ্রামে ভূগর্ভস্থ একটি বিশাল গুদাম ধ্বংস করেছে, যেখানে ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমানবিধ্বংসী গোলাবারুদ ছিল”। হামলাটি শুক্রবার চালানো হয়েছিল তবে, রাশিয়ার দাবিটি নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা হয়নি।
ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন যে, কিনজাল ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার আরও পরিষ্কারভাবে দেখায় যে, প্রচলিত স্থল বাহিনী ব্যবহার করে রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে এবং ইউক্রেনকে সন্ত্রস্ত করতে ও দেশটির প্রতিরোধের মনোবল ভেঙে দিতে, রাশিয়া কিভাবে বেসামরিক অবকাঠামোতে নির্বিচার বোমাবর্ষণ ও নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম অস্ত্র ব্যবহার - উভয়ই বৃদ্ধি করছে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বস্থানীয় কর্মকর্তারা শনিবার জানান যে, বিগত ২৪ ঘন্টায় ইউক্রেনজুড়ে মূলত বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুর উপর রাশিয়া ১৪টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও ৪০ বার বিমানহামলা চালিয়েছে।
একই সাথে, রাশিয়ার এই দাবিটির সত্যতাও তারা স্বীকার করেছেন যে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের অবরুদ্ধ মারিউপোল বন্দরনগরীর কেন্দ্রে রাশিয়ার সৈন্যরা প্রবেশ করেছে । অনেকদিন ধরেই গোলাবর্ষণ ও খাদ্যাভাবে অবরুদ্ধ হয়ে থাকা ৩,০০,০০০ বাসিন্দার এই শহরটিতে, খাবার ও পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে এবং বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। মৃতদেহগুলো রাস্তায় পড়ে রয়েছে বা বারান্দায় ঢেকে রাখা হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি শনিবার বলেছেন যে, শহরটি “সেটির ইতিহাসের, ইউক্রেনের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার” মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।