অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নকে “গণহত্যা” ঘোষণা করবে যুক্তরাষ্ট্র


২০১৭ সালের ৭ই সেপ্টেম্বরের এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে মিয়ানমারের উত্তর রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রামে বাড়ি ঘর পোড়ানোর দৃশ্য। (ফাইল ছবি- এপি)
২০১৭ সালের ৭ই সেপ্টেম্বরের এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে মিয়ানমারের উত্তর রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রামে বাড়ি ঘর পোড়ানোর দৃশ্য। (ফাইল ছবি- এপি)

ওয়াশিংটন—রোহিঙ্গা মুসলিম জনগণের ওপর মিয়ানমারের দীর্ঘদিনের সহিংসতাকে বাইডেন প্রশাসন “গণহত্যা” হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে রবিবার (২০ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী (সেক্রেটারি অব স্টেট) অ্যান্টনি ব্লিংকেন সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের একটি অনুষ্ঠানে দীর্ঘ-প্রত্যাশিত এই ঘোষণা দেবেন বলে পরিকল্পনা রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মকর্তারা বলেন।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ওপর একাধিক কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফলে নতুন এই স্বীকৃতি (গণহত্যার) সামরিক নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে বলে মনে হয় না।

তবে এটি সরকারের ওপর অতিরিক্ত আন্তর্জাতিক চাপের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমার জান্তা সরকার ইতিমধ্যে হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছে। মানবাধিকার গোষ্ঠী ও আইন প্রণেতারা “গণহত্যার” স্বীকৃতি দিতে ডনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন উভয়কেই চাপ দিয়ে আসছেন।

কংগ্রেসের অন্তত একজন সদস্য, ওরেগনের ডেমোক্র্যাট সেন জেফ মার্কলে, এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। যেমনটি রিফিউজি ইন্টারন্যাশনাল করেছে।

“রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতাকে অবশেষে গণহত্যা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আমি বাইডেন প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাই”, পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে ঘোষণা দেওয়ার পরপরই তিনি বলেন। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ব্লিংকেন সোমবার হলোকাস্ট মিউজিয়ামে মিয়ানমারের বিষয়ে বক্তব্য দেবেন এবং “বার্মা’স পাথ টু জেনোসাইড” নামে একটি প্রদর্শনী পরিদর্শন করবেন। মিয়ানমার বার্মা নামেও পরিচিত।

মানবিক সংগঠন রিফিউজিস ইন্টারন্যাশনালও এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে। “যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা একটি সমাদৃত এবং গভীরভাবে অর্থবহ পদক্ষেপ”, সংস্থাটি একটি বিবৃতিতে বলেছে। “এই ঘোষণা সেই সব নিপীড়িতের জন্য ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতিস্বরূপ যারা এখনো সামরিক জান্তার নির্যাতনের শিকার হচ্ছে”।

মার্কলে আরও চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে মিয়ানমারের তেল ও গ্যাস খাতের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্য বাইডেন প্রশাসনকে আহ্বান জানান। “আমেরিকাকে অবশ্যই বিশ্বকে এটা স্পষ্ট করতে হবে যে, এই ধরনের নৃশংসতাকে কখনোই ক্ষমা করা হবে না, সেগুলো যেখানেই ঘটুক না কেন”, তিনি বলেন।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় নিধন অভিযান শুরু করার পর সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, হত্যা এবং হাজার হাজার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

XS
SM
MD
LG