অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তামিম–সাকিবদের ইতিহাস


দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ার সেঞ্চুরিয়ন পার্কে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বাংলাদেশের মধ্যে তৃতীয় এবং শেষ একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের শেষে জয় উদযাপন করার সময় বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। ২৩শে মার্চ, ২০২২।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ার সেঞ্চুরিয়ন পার্কে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বাংলাদেশের মধ্যে তৃতীয় এবং শেষ একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের শেষে জয় উদযাপন করার সময় বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। ২৩শে মার্চ, ২০২২।

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বুধবার সেঞ্চুরিয়নের সুপার স্পোর্ট পার্কে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে তামিম ইকবাল–সাকিব আল হাসানরা। এটি দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়। ২০১৫ সালে দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ।

সেঞ্চুরিয়নে বুধবার বাংলাদেশের বোলাররা দাঁড়াতেই দেননি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের। ফাস্ট মিডিয়াম বোলার তাসকিন আহমেদ ৩৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেন প্রোটিয়াদের। দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৭ ওভারে গুটিয়ে যায় মাত্র ১৫৪ রানে। তাসকিনের ৫ উইকেটের পাশাপাশি ২ উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। একটি করে উইকেট নিয়েছেন পেসার শরীফুল ইসলাম ও অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।

দক্ষিণ আফ্রিকার মামুলি সংগ্রহ বাংলাদেশ পেরিয়েছে খুব সহজেই। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান অধিনায়ক তামিম ইকবাল আর লিটন দাসই বাংলাদেশকে জয়ের খুব কাছে পৌঁছে দেন। উদ্বোধনী জুটিতেই আসে ১২৭ রান। তামিম ৮২ বলে ৮৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসে ছিল ১৪টি বাউন্ডারি। লিটন ৫৭ বলে ৪৮ রান করে কেশব মহারাজের বলে বাভুমার হাতে ধরা পড়েন। লিটন মেরেছেন ৮টি বাউন্ডারি। লিটনের বিদায়ের পর তামিম সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকতাটুকু সারেন। বাংলাদেশকে এনে দেন ঐতিহাসিক এক জয়। সাকিব অপরাজিত ছিলেন ২টি বাউন্ডারিতে ২০ বলে ১৮ রান করে। বাংলাদেশ খেলা শেষ করে ১৪১ বল হাতে রেখেই।

টসে জিতে এ ম্যাচে ব্যাটিং নিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। তাদের শুরু ছিল আশা–জাগানিয়াই। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইয়ানেমান ম্যালান আর কুইন্টন ডি কক শুরুটা ভালোই করেছিলেন। বিশেষ করে ম্যালানের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা কোনো উইকেট না হারিয়েই
৪৬ রান তুলে ফেলেছিল। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ডি কক লং অন বাউন্ডারিতে মাহমুদউল্লাহকে ক্যাচ দিলে প্রোটিয়াদের বিপর্যয়ের শুরু। এরপর দলীয় ৬৬ রানে কাইল ভেরেইন ফেরেন তাসকিন আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে। ৬৯ রানে ইনফর্ম ম্যালানকেও উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিমের ক্যাচে ফেরান তাসকিন। এরপর নিয়মিত বিরতিতে দক্ষিণ আফ্রিকা হারায় টেম্বা বাভুমা, রাসি ফন ডার ডুসেন, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস, ডেভিড মিলার,কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিডি ও কেশব মহারাজের উইকেট। তাসকিন হয়ে ওঠেন ভয়ংকর। তাঁর বলে ভেরেইন ও ম্যালান ছাড়াও আউট হয়েছেন মিলার, প্রিটোরিয়াস ও রাবাদা। শরীফুল নেন ফন ডার ডুসেনের উইকেট। বাভুমা ও এনগিডি আউট হয়েছেন সাকিবের বলে। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটি তাসকিন আহমেদের দ্বিতীয় ৫ উইকেট–কীর্তি। ২০১৪ সালে ঢাকায় ওয়ানডে অভিষেকে ভারতের বিপক্ষে ৫ উইকেট পেয়েছিলেন তাসকিন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৯ রান ম্যালানের। কেশব মহারাজ করেছেন ২৮ আর প্রিটোরিয়াস ২০।


দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন তাসকিন আহমেদ। একই সঙ্গে সিরিজ–সেরাও হয়েছেন তাসকিন। পুরস্কার বিতরণীয় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের এই ফাস্ট মিডিয়াম বোলার বলেন, "আমি দারুণ খুশি ও গর্বিত। এই প্রথমবারের মতো আমি সিরিজ–সেরা হলাম। গত দেড় বছর আমি একটা প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছি। প্রতিটি ম্যাচেই আমার অধিনায়কের কাছ থেকে আমি সমর্থন পাই। একটা নির্দিষ্ট
দায়িত্ব পাই তার কাছ থেকে। সেই দায়িত্বটা হলো আগ্রাসী বোলিং করে উইকেট নেওয়া। আমি এ দায়িত্বটা দারুণ উপভোগ করি। আমি মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করেছি। একই সঙ্গে কাজ করেছি আমার বোলিং লেংথ নিয়ে। তবে ফ্ল্যাট উইকেটে ৫ উইকেট পাওয়ার ব্যাপারটিও আমাকে শিখতে হবে।"

XS
SM
MD
LG