অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ঢাকায় যানজট নিরসনে সাবওয়ে নির্মাণের বিকল্প নেই—সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের


ঢাকায় যানজট নিরসনে সাবওয়ে নির্মাণের বিকল্প নেই—সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনে সাবওয়ে নির্মাণের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “ঢাকা মহানগরীর যানজট এবং জনজট দূর করতে সাবওয়ে নির্মাণের কোনো বিকল্প নেই”।

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) ঢাকার একটি হোটেলে “ঢাকা শহরে সাবওয়ে নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা” শীর্ষক প্রকল্পের খসড়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর মতামত গ্রহণের জন্য অনুষ্ঠিত সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ঢাকা এখন দূষণের নগরী। এ নগরীকে বাসযোগ্য করার জন্য নতুন উদ্যমে নতুন নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে”।

উল্লেখ্য, ২৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা সাবওয়ে নেটওয়ার্কের জন্য স্পেনের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টিপসা প্রাথমিকভাবে ১১টি রুট এলাইনমেন্ট প্রস্তাব করে। এই ১১টি রুটের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১০৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চারটি রুট ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। চারটি রুটের একটি হলো; ২৪টি স্টেশনবিশিষ্ট ৩৪ দশমিক ৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ ঝিলমিল থেকে টঙ্গি জংশন রুট। এই রুটের প্রতি কিলোমিটারে সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ২ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা। দ্বিতীয় রুট হলো; ১৪টি স্টেশনবিশিষ্ট ২২ দশমিক ৮৯ কিলোমিটার দীর্ঘ গাবতলী থেকে ভোলাব ইউনিয়ন রুট। এই রুটে প্রতি কিলোমিটারে সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ২ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। তৃতীয় রুট হলো; ১৫টি স্টেশনবিশিষ্ট ২৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ কেরানীগঞ্জ থেকে সোনাপুর ইউনিয়ন রুট। এই রুটে প্রতি কিলোমিটারে সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকা এবং চতুর্থ রুট হলো; ৩২টি স্টেশনবিশিষ্ট ৪৫ দশমিক ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ সাভারের জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নারায়ণগঞ্জ রুট। এই রুটে প্রতি কিলোমিটারে সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা।

সাবওয়ের জন্য নির্মিত টানেল ভূপৃষ্ঠ থেকে আনুমানিক ২৫ থেকে ৭০ মিটার নিচ দিয়ে যাওয়ার কারণে জমি অধিগ্রহণ ও নির্মাণজনিত কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে না। সাবওয়েটি নির্মিত হলে ঢাকা শহরের প্রায় ৮০লাখ কর্মজীবী মানুষের মধ্যে অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় ৪০ লাখ মানুষ মাটির নিচ দিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন এবং মাটির উপরিভাগ যানজট ও জনজট মুক্ত থাকবে।

পরে সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেনের উপস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি থেকে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও দোতলা রাস্তা নির্মাণের লক্ষে যৌথভাবে চীনের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান স্যানডন ও সিএসআই এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

চুক্তির আওতায় ৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দোতালা সড়ক নির্মাণসহ মোট ১০ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত করা হবে। প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার চুক্তিপত্রে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষে পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও দোতলা রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে লিউ জিন স্বাক্ষর করেন।

সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্রানসিসকো ডি আসিস বেনিতেজ সালাস, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান এমপি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

XS
SM
MD
LG