অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

নিউমার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ীদের ফের সংঘর্ষে আহত ৩০


ঢাকায় নিউ মার্কেট ব্যবসায়ীদের সাথে সংঘর্ষের সময় ঢাকা কলেজের ছাত্ররা পাথর নিক্ষেপ করছে। (ছবি মুনির উজ জামান / এএফপি)
ঢাকায় নিউ মার্কেট ব্যবসায়ীদের সাথে সংঘর্ষের সময় ঢাকা কলেজের ছাত্ররা পাথর নিক্ষেপ করছে। (ছবি মুনির উজ জামান / এএফপি)

রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবারের এ সংঘর্ষে সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীসহ ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার মধ্যরাতে সংঘর্ষের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তাদের মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ থেমে ছিল, তবে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোনো মুহূর্তে আবারও সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

আহতদের মধ্যে প্রায় ২৪ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।

সংঘর্ষের ফলে সায়েন্স ল্যাব থেকে আজিমপুর পর্যন্ত যানবাহন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় মিরপুর রোড ও তৎসংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

সকাল থেকেই ওই এলাকার দোকান মালিকরা তাদের দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন।

সোমবার রাতে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের কথিত হামলার প্রতিবাদে সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করতে নীলক্ষেত মোড়ে গেলে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, নিউমার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘উত্ত্যক্ত' করলে ও 'উসকানি’ দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় ইট-পাটকেল ও বোমা নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে।

ঢাকায় নিউ মার্কেট ব্যবসায়ীদের সাথে সংঘর্ষের পর পুলিশ ঢাকা কলেজ থেকে ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। (ছবি মুনির উজ জামান / এএফপি)
ঢাকায় নিউ মার্কেট ব্যবসায়ীদের সাথে সংঘর্ষের পর পুলিশ ঢাকা কলেজ থেকে ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। (ছবি মুনির উজ জামান / এএফপি)

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ডেপুটি অফিসার (মিডিয়া) খালেদা ইয়াসমিন বলেন, দুপুর ১২টার দিকে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ও নুরজাহান সুপার মার্কেটের কয়েকটি দোকানে অগ্নি সংযোগে ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। পরে ব্যবসায়ীরা আগুন নিভিয়ে ফেলে তবে সেখানে ব্যবসায়ীদের ভিড় থাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি।

ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সেক্রেটারি ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস শিকদার জানান, সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে ঢাকা কলেজের অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (নিউমার্কেট জোন) শরীফ বলেন, গতকাল রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি।

তিনি বলেন, "শিক্ষার্থীরা আজ সকালে হামলার প্রতিবাদ করছিল এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ জানিয়েছে তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের দোকান খুলতে দেবে না।"

শিক্ষার্থীদের মতে, তাদের দুই সহপাঠীকে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে কারণ সোমবার রাতে পুলিশ রাবার বুলেটে তাদের চোখে আঘাত লেগেছে।

সংঘর্ষে দীপ্ত টিভির সাংবাদিক আসিফ সুমিত ও ক্যামেরাপারসন, এসএ টিভির রিপোর্টার তুহিন ও ক্যামেরাপারসন কবির হোসেন, মাই টিভির রিপোর্টার ড্যানি দ্রং ও আরটিভির ক্যামেরা পারসন সুমন দে আহত হন।

সংঘর্ষের সময় ডেইলি স্টারের ফটোগ্রাফার প্রবীর দাস ও আজকের পত্রিকার প্রতিবেদক আল আমিন রাজুকে ব্যবসায়ীরা মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার মধ্যরাতের দিকে ব্যবসায়ী ও কলেজ ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে, তাদের কয়েকজন সহপাঠী নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে গেলে কয়েকজন দোকানদারের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দুই শিক্ষার্থীকে তারা মারধর ও ছুরিকাঘাত করে।

পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে প্রায় চার ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে কয়েকজন পুলিশও আহত হন। সংঘর্ষের কারণে মিরপুর রোডে কয়েক ঘণ্টার জন্য যান চলাচল বন্ধ থাকে।

XS
SM
MD
LG