বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নাহিদ (১৭) নামে এক পথচারী যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাত ৯টা ৪০ মিনিটে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ভয়েস অফ আমেরিকাকে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইসিইউর কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তৌফিক এলাহী। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মো. বাচ্চু মিয়াও মৃত্যুও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত নাহিদের বাবা নাদিম হোসেন ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানান, তাদের বাড়ি কামরাঙ্গীরচর দেওয়ানবাড়ী এলাকায়। এ্যালিফেন্ট রোডের বাটা সিগনালে একটি কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিতে চাকরি করতো নাহিদ। মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কাজে যায় নাহিদ। এরপর দুপুর থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। বিকেলে ফেসবুকের মাধ্যমে তার আহত হওয়ার ছবি দেখতে পান তারা। এরপরে তাকে হাসপাতালে খুঁজে পাওয়া যায়।
সন্তান হারানো নাদিম হোসেন বলেন, “নাহিদ ছয়মাস আগে বিয়ে করেছে। তার স্ত্রীর নাম ডালিয়া। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিল নাহিদ।"
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে সংঘর্ষের এই ঘটনায় মোরসালিন (২৬) নামে আরও এক যুবক ঢাকা মেডিকেলের লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন আছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিউ সুপার মার্কেটে কাপড়ের দোকানের কর্মচারী তিনি। সংঘর্ষের সময় তার মাথায় গুরুতর আঘাত পায়। এখন পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে মোরসালিন সহ ঢাকা কলেজের দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র কানন চৌধুরী (২৩) ও দোকান কর্মচারী ইয়াসিন (১৭)। তাদেরও মাথায় আঘাত, অবস্থা গুরুতর।
এছাড়া ঢাকার বেসরকারি বিআরবি হাসপাতালে মুমূর্ষ অবস্থায় দুই সাংবাদিক ভর্তি রয়েছেন। এই হসপিটালের আইসিইউ চিকিৎসক আশরাফ জুয়েল ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “নিউ মার্কেটের হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আহত দুই সাংবাদিক আমার বিভাগে ভর্তি রয়েছেন। তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার (১৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। রাত আড়াইটা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। এরপর মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার সংঘর্ষ শুরু হয়ে বিকেল পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। মঙ্গলবার মিরপুর সড়কে মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে আছেন নিউমার্কেটের দোকানি ও ঢাকা কলেজের ছাত্ররা। এখনও এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অপরদিকে ঢাকা কলেজ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অনড় শিক্ষার্থীরা কলেজের হলে অবস্থান করার ঘোষণা দিয়েছে।
