ইসলাম অবমাননার অভিযোগে শ্রীলঙ্কার এক কারখানার ম্যানেজারকে হত্যার দায়ে পাকিস্তানের একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালত ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য নয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।
সোমবার আদালতের ঘোষিত রায়ে জানা যায়, অতিরিক্ত ৭২ জন সন্দেহভাজনের প্রত্যেককে দুই বছরের “সশ্রম” কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ডিসেম্বরে প্রিয়ন্তা কুমারার ওপর ভয়ঙ্কর ভাবে গণপিটুনিতে ভূমিকা রাখায় অন্য একজনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
অন্যদেরকে কথিত ধর্ম অবমাননামূলক কার্যক্রম সম্পর্কে জানানোর আগেই নিহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কারখানার দেয়াল থেকে হজরত মুহাম্মদের নাম সম্বলিত পোস্টার অপসারণ ও অপবিত্র করার অভিযোগ আনা হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে তদন্তকারীরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন এবং শুধুমাত্র কারখানার বিধি-বিধান মেনে চলার নির্দেশ দেয়ার কারণে কুমারকে হত্যা করা হয়েছিল।
একজন বিদেশীর এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ফলে দেশব্যাপী ক্ষোভ ও নিন্দার সৃষ্টি হয়, অপরাধীকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়ার দাবি ওঠে যা পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে দ্রুত বেশকিছু সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করতে এবং তাদের বিচারের জন্য উদ্যোগী করে।
কথিত ধর্ম-অবমানাকারীদের গণ-পিটুনিতে হত্যা করা পাকিস্তানে সাধারণ ঘটনা কিন্তু কোনো বিদেশীকে গণ-পিটুনিতে হত্যা করার ঘটনা এই প্রথম।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানে ধর্ম-অবমাননা একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। স্থানীয় আইনে এ অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে যদিও এই অপরাধের জন্য কাউকেই আজ পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়নি। কারণ নিম্ন আদালতের দোষী সাব্যস্ত করে প্রদানকৃত শাস্তি প্রায়শই উচ্চতর আদালতে বাতিল করা হয়।
সমালোচকেরা দীর্ঘদিন ধরে আইন সংস্কারের আহ্বান জানিয়ে আসছেন। তারা বলছেন, দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদেরকে ভীতি প্রদর্শন এবং বিরোধীদের ব্যক্তিগত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য চাপ দেয়ার উদ্দেশ্যে সমাজের প্রভাবশালী সদস্য এবং ধর্মান্ধদের দ্বারা ধর্ম অবমাননা সংক্রান্ত আইনের অপব্যবহার করা হয় ।