দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত — সংযুক্ত আরব আমিরাতের শাসকরা শনিবার সর্বসম্মতিক্রমে আবু ধাবির শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানকে ঐ স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে নিযুক্ত করেছেন।
শুক্রবার তার সৎ ভাই এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, ৭৩ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করলে, ৬১ বছর বয়সী শেখ মোহাম্মদের প্রেসিডেন্ট হওয়াটা প্রত্যাশিতই ছিল।
রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা ডব্লিউএএম জানিয়েছে, আবু ধাবির আল-মুশরিফ প্রাসাদে অনুষ্ঠিত, বংশানুক্রমে শেখ শাসিত আমরিরাতগুলোর শাসককেদের ভোট প্রদান ছিল সর্বসম্মত।
দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর দায়িত্ব গ্রহণ দেশটিতে একটি নতুন ঐতিহাসিক যুগ ও নতুন জন্মের সূচনা করল৷”
বিশ্বনেতাদের মধ্যে ওমানের সুলতানই প্রথম নেতা, যিনি শনিবার রাতে শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সাথে দেখা করেছেন। রবিবার দেখা করতে যাচ্ছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এছাড়া আগামী কয়েকদিনে আরো কয়েকজন তাঁর সাথে দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
দেশটিতে প্রায় ৩,৫০০ আমেরিকান সৈন্য রয়েছে, যাদের বেশিরভাগ রয়েছে আবু ধাবির আল-ধাফরা বিমান ঘাঁটিতে। আর, দুবাই হল, বিদেশে, যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর, ব্যস্ততম স্বল্প বিরতির বন্দর (পোর্ট অফ কল)। এছাড়া, ফ্রান্স এবং দক্ষিণ কোরিয়াও এখানে তাদের সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে।
শেখ মোহাম্মদ, স্যান্ডহার্স্টে ব্রিটিশ সামরিক একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং তিনি একজন হেলিকপ্টার পাইলট। প্রতিবেশী সৌদি আরবের ভুঁইফোড় যুবরবজ , মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে শেখ মোহাম্মদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবং আমেরিকার ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়ে বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলারের প্রতিবেদনে জড়িয়ে পড়েছিলেন শেখ মোহাম্মদ। ২০১৭ সালে, ট্রাম্পের অভিষেক কমিটির চেয়ারম্যানকে ২০২১ সালে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এই অভিযোগে যে, তিনি গোপনে, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সুবিধার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নীতিকে প্রভাবিত করেছিলেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্ক টানাপেড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে, ওয়াশিংটন আশা করছে, ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সোমবার আবুধাবিতে যাবেন, তখন বিষয়টির একটা সুরাহা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শনিবার এক উষ্ণ বিবৃতি দিয়ে বলেন, "নির্বাচনের জয়লাভ করার জন্য "আমার দীর্ঘদিনের বন্ধুকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।”
বাইডেন বলেন, "ইউএই যুক্তরাষ্ট্রের একটি অপরিহার্য সহযোগী রাষ্ট্র । এই অসাধারণ অবস্থানে দাঁড়িয়ে দুই দেশের মধ্যে এবং দুই দেশের জনগনের মধ্যে সম্পর্ককে আরো জোরদার করতে আমি শেখ মোহাম্মদের সঙ্গে কাজ করতে অপেক্ষা করছি।”