বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, “বিভিন্ন ধরণের নিরাপত্তা ঝুঁকি ও শোষণের শিকার কয়েক মিলিয়ন ‘জলবায়ু অভিবাসীর’ ব্যপারে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যথেষ্ট ভূমিকা পালন করছে না।” আব্দুল মোমেন বলেন, “বর্তমান আন্তঃসম্পর্কযুক্ত এই বিশ্বে, জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে বাস্তুচ্যুতি বিশ্বকে নিরাপত্তা ঝুঁকির দিকে নিয়ে যেতে পারে।”
‘এনভায়রনমেন্ট অফ পিস: সিকিউরিং আ জাস্ট এন্ড পিসফুল ট্রানজিশন ইন আ নিউ ইরা অফ রিস্ক’-শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে দেয়া বক্তব্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন, জলবায়ু-নিরাপত্তা সম্পর্ক এবং (উদ্ভূত) চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি এনফোর্সমেন্ট মেকানিজম সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা তৈরির গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
শুক্রবার (৩ জুন) আয়োজিত স্টকহোম+৫০ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সাইডলাইন হিসেবে, স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) এই বৈঠকের আয়োজন করে।
শনিবার (৪ জুন) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, মোমেন তার বক্তব্যে, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসীদের পুনর্বাসনের বোঝা ভাগাভাগি করতে, বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
এছাড়াও, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী মাতিলদা এরনক্রানসের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন, শিক্ষা এবং অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন।
তিনি সুইডেনের মন্ত্রীর প্রতি, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে নিজেদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য, মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন, জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল এবং ইউনাইটেড ন্যাশন্স এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনইপি)-এর নির্বাহী পরিচালক ইঙ্গার অ্যান্ডারসেন এর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, এসময় ইউএনইপির সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে, অ্যান্ডারসেনের সঙ্গে আলোচনা করেন।
অ্যান্ডারসেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করেন।
তিনি জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইউএনইপি কর্তৃক আয়োজিত জলবায়ু প্রযুক্তি তহবিল থেকে বাংলাদেশকে সহায়তা করার প্রস্তাব দেন।
‘অ্যাচিভিং এ সাসটেইনেবল এন্ড ইনক্লুসিভ রিকভারি ফ্রম দ্য কোভিড-১৯ প্যান্ডামিক’-শীর্ষক লিডারশিপ ডায়লগে বক্তব্য দেয়ার সময়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ ও রাজনৈতিক বিভাজন নির্বিশেষে সকলের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের জন্য প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক বিভাজন দূর করার পরামর্শ দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন, জলবায়ু অভিযোজন, প্রশমন ও স্থিতিস্থাপকতা, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবহারের ধরণ পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক বাসস্থান ও জীববৈচিত্র্যের বিলুপ্তি বন্ধ করার জন্য বিনিয়োগ বাড়ানোর সুপারিশ করেন।