অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশকে খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে: গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা


‘এ ওয়ার্ল্ড ইন টার্মায়েল: দ্য ফলআউট ফ্রম দ্য ইউক্রেন কনফ্লিক্ট’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক
‘এ ওয়ার্ল্ড ইন টার্মায়েল: দ্য ফলআউট ফ্রম দ্য ইউক্রেন কনফ্লিক্ট’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক

এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেছেন, “কর্মক্ষম মানব সম্পদ, খাদ্য উৎপাদন ও ভৌগোলিক অবস্থানে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। তবে, জ্বালানি অনুসন্ধান বাড়ানোর পাশাপাশি প্রচলিত ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির বৈচিত্র্যপূর্ণ নীতি এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।” তারা বলছেন,“বহুবিধ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও, টেকসই নীতির অভাবে বাংলাদেশ নিজস্ব জ্বালানি অনুসন্ধানে গত দেড় দশকে পিছিয়ে পড়েছে।বাংলাদেশকে খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে।”

বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে কসমস ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআইপিএসএস) যৌথ আয়োজনে, ‘এ ওয়ার্ল্ড ইন টার্মায়েল: দ্য ফলআউট ফ্রম দ্য ইউক্রেন কনফ্লিক্ট’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরেন আলোচকরা।

কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতউল্লাহ খান ও বিআইপিএসএসের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এএনএম মুনিরুজ্জামান এই আলোচনা সঞ্চালনা করেন।আলোচনায় অংশ নেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের (বিইউপি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে সালমা তারিন এবং ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসি।

এনায়েতউল্লাহ খান বলেন, “বাংলাদেশকে প্রচলিত ও নবায়নযোগ্য খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য জ্বালানি অনুসন্ধানের পাশাপাশি বৈচিত্র্যপূর্ণ নীতি উন্নত করতে হবে। বাংলাদেশ যদি স্বল্প সময়ের মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে গ্যাস উত্তোলন সম্প্রসারণ করতে না পারে, তবে, তেল-গ্যাস আমদানিতে বড় অর্থ প্রদানের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের জন্য বড় উদ্বেগ থাকবে।”

তিনি বলেন, “খাদ্য নিরাপত্তার মতো জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, এখনই সময় গ্যাস অনুসন্ধানে মনোনিবেশ করার এবং স্থিতিশীল অর্থনীতির জন্য আর্থিক নীতিতে দ্রুত পর্যালোচনা প্রয়োজন।”

“রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে, বাংলাদেশের কৃষি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কেননা এ অস্থিরতার কারণে রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে সার আমদানির একটি বড় অংশ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া ইউক্রেনের অস্থিরতার কারণে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে; উল্লেখ করেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতউল্লাহ খান।

মেজর জেনারেল মুনিরুজ্জামান বলেন, “ইউক্রেনের অস্থিরতা বিশ্বে নিরাপত্তা ও জ্বালানি উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং কবে এটি শেষ হবে, তা এখনই কেউ বলতে পারবে না। আমরা প্রাথমিকভাবে ইউক্রেনের অস্থিরতার তিনটি মাত্রা চিহ্নিত করেছি; খাদ্য, জ্বালানি ও অর্থ। যেহেতু বিশ্বের দেশগুলো একে অপরের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে সংযুক্ত, তাই প্রতিটি দেশ যুদ্ধের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

তিনি বলেন, “সম্প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ডলারের বিনিময় হার ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে; যা বাংলাদেশের ব্যবসা ও অর্থ ব্যবস্থাপনার জন্য উদ্বেগ তৈরি করেছে।”

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, “বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির সংবেদনশীলতা বিবেচনায় বাংলাদেশকে মাঝামাঝি থাকতে হবে এবং কোনো বিশেষ দেশের পক্ষপাতিত্ব হবে মারাত্মক ভুল। বিশ্ব কখনোই সম্পূর্ণভাবে শান্তিপূর্ণ থাকে না। এ অশান্তি দীর্ঘকাল অব্যাহত থাকবে। এ জন্য বাংলাদেশকে নির্ভরযোগ্য ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের কথা মাথায় রেখে নীতি নির্ধারণ করতে হবে।”

উম্মে সালমা বলেন, “বিশ্বের বিভিন্ন বৃহৎ শক্তির মধ্যে মেরুকরণ হচ্ছে; নিরাপত্তা ও আর্থিক সুবিধার কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশের একটি স্মার্ট কৌশল ও অংশীদারিত্ব প্রয়োজন। ইউক্রেনের অস্থিরতা ইউরোপে নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি করেছে এবং অনেক ইইউ দেশ তাদের সামরিক ব্যয় জিডিপির দুই শতাংশের বেশি বাড়িয়েছে।”

পারভেজ করিম আব্বাসি বলেন, “তেল উৎপাদনে রাশিয়া বিশ্বে তৃতীয়, গ্যাস মজুতে দ্বিতীয়, ইউক্রেন ও রাশিয়া বিশ্ব বাজারে এক-তৃতীয়াংশ গম রপ্তানি করে। হাইড্রোকার্বনের জন্য উপকূলীয় অনুসন্ধান প্রয়োজন। আমাদের অবশ্যই এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক সংকট থেকে শিক্ষা নিতে হবে।”

XS
SM
MD
LG