বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সোমবার (১ আগস্ট) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমদানি ব্যয় বিপুল পরিমাণে বেড়ে যাওয়ায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে, বাংলাদেশে এক হাজার আটশ’৭০ কোটি ডলার চলতি হিসাবের ভারসাম্যে বা ব্যালেন্স অব পেমেন্ট (বিওপি) ঘাটতি হয়েছে।
আগের অর্থবছরে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল চারশ’ ৫৭ কোটি ডলার। এর আগে কোনো অর্থবছরেই বাংরাদেশে এত বেশি বিওপি ঘাটতি দেখা যায়নি।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আমদানি বাড়ায় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলোর অবনতি হয়েছে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক, অর্থনীতিবিদ ও গবেষক আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, এই ঘাটতি সামষ্টিক অর্থনীতির উদ্বেগজনক অবস্থার বহিঃপ্রকাশ।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, “আমদানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে বৈদেশিক লেনদেনে এই বিশাল ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এটা সত্য যে আমদানি বাড়ার একটা ইতিবাচক দিক আছে; বিনিয়োগ বাড়ে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, অর্থনীতিতে গতি আসে। কিন্তু প্রায় ১৯ বিলিয়ন ডলারের ভারসাম্য পরিশোধের ঘাটতি সত্যিই উদ্বেগের বিষয়। এই ঘাটতির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে অস্থিতিশীলতা বা সংকট দেখা দিয়েছে।”
আহসান এইচ মনসুর বলেন, “বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এই আমদানি ব্যয় বাড়ার কারণ। সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়ার পরও, আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এই ব্যয় বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতিও বাড়ছে। সব মিলিয়ে অর্থনীতিতে সংকট বাড়ছে।”
এ অবস্থায় আমদানি কমাতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেন মনসুর।
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তথ্য অনুসারে, বিদায়ী ২২ অর্থবছর শুরুই হয়েছিল ঘাটতি নিয়ে। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রথম তিন মাসে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল দুইশ’ ৩১ কোটি ডলার। চার মাস শেষে (জুলাই-অক্টোবর), তা বেড়ে দাঁড়ায় চারশ’ ৭৭ কোটি ডলারে। এভাবে প্রতি মাসেই আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে ভারসাম্য ঘাটতি।