অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

রুশদির ওপর হামলার পর ইরানে প্রশংসা ও উদ্বেগ, সরকার নীরব


ইরানের সংবাদপত্র ভাতান-ই এমরুজ-এর প্রথম পৃষ্ঠার ছবি; শিরোনাম 'সালমান রুশদির ঘাড়ে ছুরি'। হামশাহরি’র শেষ পৃষ্ঠার ছবি, শিরোনাম ‘স্যাটানিক ভার্সেস এর লেখকের উপর হামলা’। ১৩ই আগস্ট, ২০২২
ইরানের সংবাদপত্র ভাতান-ই এমরুজ-এর প্রথম পৃষ্ঠার ছবি; শিরোনাম 'সালমান রুশদির ঘাড়ে ছুরি'। হামশাহরি’র শেষ পৃষ্ঠার ছবি, শিরোনাম ‘স্যাটানিক ভার্সেস এর লেখকের উপর হামলা’। ১৩ই আগস্ট, ২০২২

ইরানের প্রয়াত শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি সালমান রুশদির মৃত্যুর আহ্বান জানিয়ে ছিলেন কয়েক দশক আগে। সেই ফতোয়ার লক্ষ্যবস্তু হিসেবে ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর হামলার ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শনিবার ইরানিরা প্রশংসা করেছে এবং উদ্বেগ জানিয়েছে।

শুক্রবার পশ্চিম নিউ ইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার জন্য প্রস্তুতিকালে চালানো হামলার জন্য নিউ জার্সির ফেয়ারভিউয়ের হাদি মাতার নামে একজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তবে,ঐ ব্যক্তি কেন লেখককে ছুরিকাঘাত করেছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইরানের ধর্মতান্ত্রিক সরকার এবং দেশটির রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম এই হামলার পর কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি।

২৭ বছর বয়সী ডেলিভারিম্যান রেজা আমিরি নামে একজন এএফপি কে বলেন “সালমান রুশদিকে চিনি না, কিন্তু আমি এটা শুনে খুশি যে, ইসলামকে অপমান করায় তার ওপর হামলা করা হয়েছে। যে পবিত্রতাকে অপমান করে, তার এমনটাই প্রাপ্য।"

অন্য অনেকেই এ হামলার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তারা মনে করেন যে, বন্ধ হয়ে যাওয়া পারমানবিক চুক্তি নিয়ে উৎকন্ঠার মধ্যে এই ঘটনা ইরানকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আরো বিচ্ছিন্ন করে রদিতে পারে। তাদের মতোই উদ্বেগ প্রকাশ করেন ৩৯ বছর বয়সী ভূগোলের শিক্ষক মাহশিদ বারাতি। তিনি বলেন, “আমি মনে করি যারা এটি করেছে তারা ইরানকে বিশ্ব বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে। এই ঘটনা অনেকের সাথে চলমান সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, এমনকি রাশিয়া ও চীনের সাথেও।"

খোমেনি তার জীবনের শেষ প্রান্তে, যখন ১৯৮০’র দশকের ইরান-ইরাক যুদ্ধের মাধ্যমে ইরানের অর্থনীতিকে প্রায় মেরে ফেলছিলেন, তখন ১৯৮৯ সালে রুশদির ওপর ফতোয়া জারি করেছিলেন।
এই ইসলামী নেতা রুশদির উপন্যাসটি নিয়ে মুসলিম বিশ্বে আলোড়ন তুলতে চেষ্টা করেন। অনেকে মনে করেন, ঐ উপন্যাসে নবী মুহাম্মদের (সঃ) জীবন অপমানকরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

শনিবার সংবাদপত্রগুলো তাদের, প্রথম পৃষ্ঠার শিরোনামে আক্রমণের বিষয়ে তাদের নিজস্ব মতামত দিয়েছে। কট্টরপন্থী ভাতান-ই এমরুজের মূল শিরোনাম ছিল, "সালমান রুশদির গলায় ছুরি।" সংস্কারবাদী পত্রিকা ইতেমাদ-এর শিরোনাম প্রশ্ন করা হয়, সালমান রুশদি্র কি মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে?

সাবেক ইরানি কূটনীতিক মাশাল্লাহ সেফাৎজাদেহ সতর্ক করে দিয়ে বলেন, " এই ঘটনা ইরানকে আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলবে।”

ইরানের বর্তমান সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি, যিনি খোমেনির মৃত্যুর পর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তিনি ১৯৮৯ সালে দেয়া ফতোয়াটি প্রত্যাহার অথবা সংশোধন করতে পারতেন। কিন্তু, তিনি তা করেননি। খামেনি বলেন, “১৯৮৯ সালে সালমান রুশদির ওপর দেয়া সিদ্ধান্ত এখনও বৈধ।”

XS
SM
MD
LG