অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার ৭ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর পালিয়ে যাওয়ার পাঁচ বছর


২০১৭ সালের অক্টোবরে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের পালং খালিতে একটি কর্দমাক্ত ধানের ক্ষেত পার হচ্ছে।
২০১৭ সালের অক্টোবরে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের পালং খালিতে একটি কর্দমাক্ত ধানের ক্ষেত পার হচ্ছে।

এই সপ্তাহে মিয়ানমারে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে পালিয়ে যাওয়ার পাঁচ বছর পূর্তি । তারা এর আগের বছরগুলিতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সাথে শামিল হয়েছে।

২০১৭ সালের আগস্টে প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ যে পরিস্থিতিতে স্বদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল এখন পর্যন্ত তার কোনো সুরাহা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, দেড় বছর আগে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় আসীন হবার পর, সামরিক জান্তা জনগণের বিরুদ্ধে নৃশংস অভিযান আরও বাড়িয়েছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার অনুমান, এখনো প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত, যাদের বেশিরভাগই রাখাইন রাজ্যে। সংস্থাটি বলেছে, যেরকম নিপীড়নমূলক পরিস্থিতিতে তারা সেখানে বসবাস করছে, তাতে আশ্রিত শরণার্থীদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসইভাবে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।

ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, নির্বাসনে পাঁচ বছর অতিবাহিত করার পর, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে যাওয়া সর্বশেষ জনস্রোতকে এখন আনুষ্ঠানিকভাবে একটি দীর্ঘস্থায়ী পরিস্থিতি হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। শরণার্থীরা যারা দীর্ঘস্থায়ী এই অনিশ্চিত অবস্থায় বাস করছে, তারা বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে আন্তর্জাতিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীল।

ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র শাবিয়া মান্টু বলেছেন, তার সংস্থা রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা আরও বাড়ানোর আবেদন করছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এই সংকটের প্রতি মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা এখন ভুলে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির, বাংলাদেশের কক্সবাজারে প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী, যাদের প্রায় অর্ধেকই শিশু, অত্যন্ত জনাকীর্ণ পরিস্থিতিতে বাস করছে।

মান্টু বলেন, রোহিঙ্গারা তাদের বেঁচে থাকার জন্য মানবিক সহায়তার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। তিনি আরও বলেন, তাদের সঠিক পুষ্টি, আশ্রয়ের উপকরণ, স্যানিটেশন এবং জীবিকার সুযোগ দরকার।

ইউএনএইচসিআর বলছে, মিয়ানমারে প্রত্যাশিত প্রত্যাবর্তনের জন্য উদ্বাস্তুদের প্রস্তুত করতে শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং জীবিকার সুযোগের জন্য সহায়তা বাড়াতে হবে।

ইতোমধ্যে, সংস্থাটি রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় সম্প্রদায়সহ ১৪ লাখেরও বেশি মানুষকে এই বছর জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রদানের জন্য ৪৫.৫ কোটি ডলার অর্থের জন্য আবেদন করেছে।

XS
SM
MD
LG