অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর সক্রিয় ভূমিকার আহ্বান বিএনপির


সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল

রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা হয়ে উঠছে উল্লেখ করে বিএনপি জানিয়েছে যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে প্রভাবশালী এশীয় ও পশ্চিমা দেশগুলোর সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “সরকার গত পাঁচ বছরে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে, কারণ তারা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য বিষয়টি ব্যবহার করছে।”

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে, মিয়ানমারে সহিংসতা ও নিপীড়নের শিকার হয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী, ছেলে ও মেয়ের বাংলাদেশের কক্সবাজারে বিশ্বের সর্ববৃহৎ শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়ার প্রথম পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “বাংলাদেশ ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বোঝা বহন করছে এবং প্রতি বছর গড়ে ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। সে হিসাবে, গত চার বছরে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১২ লাখের বেশি হয়েছে। আর, এই সংখ্যা দিন দিন বাড়তেই থাকবে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি আন্তর্জাতিক সংহতি এখন আগের চেয়ে বেশি প্রয়োজন। ভারত, চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো-সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আরও কার্যকর চাপ না দিলে, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব না।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ দিতে বাংলাদেশ সরকারকে তার কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।”

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, “যদিও বিশ্বের অনেক দেশ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার প্রতিবাদ করেছে; তবে, এটা দুঃখজনক যে তাদের অনেকের সঙ্গে মিয়ানমারের ব্যাপক ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের উচিত দেশগুলোর এই দ্বৈত অবস্থান চিহ্নিত করা এবং জোরালো কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে এগুলো বন্ধ করা।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “বর্তমান সরকার সংকীর্ণ রাজনীতির কারণে এ বিষয়ে স্পষ্ট, কার্যকর ও সুনির্দিষ্ট অবস্থান নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। সরকার এ সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায়, বাংলাদেশ বড় ধরনের সংকটে পড়তে যাচ্ছে।”

এই সংকট নিরসনে বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, “নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সরকার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই সরকার গণতান্ত্রিক না হওয়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সমর্থন লাভ করেনি।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “রোহিঙ্গা সমস্যা স্থানীয় পরিবেশ ও সামাজিক জীবনে চরম অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টির পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অসহনীয় চাপ সৃষ্টি করছে।”

XS
SM
MD
LG