অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বিক্ষোভের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফিরে এসেছেন


শ্রীলঙ্কার নগর উন্নয়ন ও আবাসন মন্ত্রকের দেওয়া এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দেশটির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে, শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে বন্দরনাইকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁর আগমনের পর দলের সংসদ সদস্যরা তাকে স্বাগত জানাচ্ছে। ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২।
শ্রীলঙ্কার নগর উন্নয়ন ও আবাসন মন্ত্রকের দেওয়া এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দেশটির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে, শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে বন্দরনাইকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁর আগমনের পর দলের সংসদ সদস্যরা তাকে স্বাগত জানাচ্ছে। ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২।

শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে, যিনি দেশটির অর্থনৈতিক পতনের জন্য ব্যাপক বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন, শুক্রবার তিনি কলম্বোতে ফিরেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন যে তার প্রত্যাবর্তনে জনগণের ক্ষোভ থাকলেও, নাগরিক আন্দোলনের কিছু নেতার বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক গৃহীত দমনমূলক পদক্ষেপের কারণে অনুরূপ প্রতিবাদের মাধ্যমে আবারো বিক্ষোভের সম্ভাবনা নেই, যে বিক্ষোভ তাঁর প্রস্থানের কারণ হয়েছিল।

রাজাপাকসে ব্যাংকক থেকে ফিরে আসেন, যেখানে তিনি অস্থায়ী ভিসায় অবস্থান করছিলেন। তিনি সাত সপ্তাহ আগে একটি সামরিক বিমানে শ্রীলঙ্কা ত্যাগ করেছিলেন, কয়েক মাস ধরে "গোটা গো হোম" এর স্লোগানের পরে রাস্তাগুলিতে জনগণ নেমে আসে, যার পরিণতিতে শত শত বিক্ষোভকারী তার সরকারী বাসভবনে হামলা করে।

তিনি প্রথমে মালদ্বীপ, তারপর সিঙ্গাপুর এবং সবশেষে ব্যাংককে যান। ফেরার পর বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান তার দলের সংসদ সদস্যরা।

ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের জন্য বিক্ষোভকারীরা রাজাপাকসের সরকারকে দায়ী করেছিল যেখানে তার পরিবারের সদস্যরা ক্ষমতাশীল পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এই মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকট আকাশছোঁয়া মুদ্রাস্ফীতি এবং প্রায় অচল খাদ্য ও জ্বালানীর ঘাটতির জন্য দায়ী।

নাগরিক আন্দোলন শক্তিশালী রাজাপাকসের রাজনৈতিক রাজবংশের প্রায় দুই দশকের ক্ষমতার উপর দখল ভেঙে দিয়েছে। রাজাপাকসে দেশ ছাড়ার আগেও, তার ভাইয়েরা,যারা প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, তারা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন কারণ ক্ষুব্ধ জনসাধারণ সে পরিবারকে দুর্নীতির জন্য এবং তাদের নীতির জন্য দায়ী করে যা দেশের অর্থনৈতিক ধ্বংসে অবদান রেখেছে।

কিন্তু রাজাপাকসের উত্তরসূরি প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে এই আন্দোলনকে দমন করার পর বিক্ষোভ বন্ধ হয়ে যায়। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার কয়েকদিন পরে, সেনারা রাষ্ট্রপতি সচিবালয়ের সামনে প্রধান শিবিরটি ভেঙে দেয়, যেখানে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তিনজন ছাত্র ইউনিয়ন নেতা, যারা বিক্ষোভের অগ্রভাগে ছিলেন, তাদের গত মাসে কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

বিক্রমাসিংহে জুলাই মাসে ক্ষমতা গ্রহণ করেন যে দলের উপর রাজাপাকসের প্রভাব রয়েছে এবং যে দলের সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে তাদের সমর্থনে। বিক্ষোভকারী এবং বিরোধী রাজনীতিকরা বিক্রমাসিংহের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বৈধতার অভাব এবং রাজাপাকসে পরিবারকে রক্ষা করার জন্য অভিযুক্ত করেছিলেন।

তবে সাবেক রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি এখনও রয়েছে।

কলম্বোতে শ্রীলঙ্কা ইয়াং জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র থারিন্দু জয়াবর্ধন, ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেছেন, "আমরা গোটাবায়া রাজাপাকসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাব, যার মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত কারণে জনসাধারণের অর্থ ব্যবহার করার অভিযোগ।"

শ্রীলঙ্কা শিক্ষক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জোসেফ স্ট্যালিন এএফপিকে বলেছেন যে তার বিচার হওয়া উচিত। "শ্রীলঙ্কার ২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষের এমন দুর্দশা সৃষ্টি করার জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত।"

XS
SM
MD
LG