অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বিতর্কিত হিমালয় সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করল ভারত ও চীন


চেন্নাই, ১০ অক্টোবর, ২০১৯; চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বাগত জানাতে তার মুখোশ পরে আছেন এক ভারতীয় স্কুলছাত্রী।
চেন্নাই, ১০ অক্টোবর, ২০১৯; চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বাগত জানাতে তার মুখোশ পরে আছেন এক ভারতীয় স্কুলছাত্রী।

ভারত ও চীন হিমালয় পর্বতমালার বেশ কয়েকটি বিতর্কিত সীমান্ত এলাকার মধ্যে, একটি এলাকা থেকে সেনা সদস্যদের ফিরিয়ে নিচ্ছে। এই এলাকায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশ দুটি অচলাবস্থায় আটকে ছিল।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে বলেছে, গোগরা-হটস্প্রিংস এলাকা থেকে পরিকল্পিত ও সমন্বিত উপায়ে সৈন্যদের সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগ সীমান্ত এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।

এই ঘোষণা, দুই দেশের মধ্যে চলমান সামরিক অচলাবস্থা নিরসনের দিকে এক ধাপ অগ্রগতি। ২০২০ সালের জুনে পশ্চিম হিমালয়ের লাদাখে এক সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় এবং চারজন চীনা সৈন্য নিহত হওয়ার পর সেখানে এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।

ঐ ঘটনার পর উভয় দেশ হিমালয় সীমান্ত জুড়ে প্রায় ৫০ হাজার করে সৈন্য মোতায়েন করে। এই সৈন্যদের সমর্থনে মোতায়েন করা হয় জঙ্গিবিমান, গোলন্দাজ বাহিনী এবং ট্যাংক বহর। ৩৮ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ হিমালয় সীমান্ত এখনও অচিহ্নিত। এই সীমান্ত অঞ্চলটি “ফ্রিকশন পয়েন্ট হিসেবে পরিচিত। এই সীসান্তের অনেক স্থানে খুব কাছাকাছি অবস্থানে দুই দেশের সৈন্য মোতায়েন রয়েছে।

নয়াদিল্লির একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক দিল্লি পলিসি গ্রুপের ব্রিগেডিয়ার অরুণ সাহগাল ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "সামরিক অচলাবস্থার কারণে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে,এমন ধারণার বদল হয়েছে। তাই এই প্রত্যাহার। এর ফলে লাদাখে কিছু মাত্রার শান্তি ফিরে আসবে।” তিনি সতর্ক করে বলেন,“ তবে, উভয় দেশ সীমান্তজুড়ে যে স্থাপনা তৈরি করেছে, খুব শিগগির তা সরানো সম্ভব হবেনা।”

আগামী সপ্তাহে উজবেকিস্তানে অনুষ্ঠেয় একটি আঞ্চলিক শীর্ষ সম্মেলনের আগে এই সেনা প্রত্যাহার শুরু হলো। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং উভয়ই সেই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে জল্পনা-কল্পনা চলছে যে, সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে বৈঠক হতে পারে। এমনটা হলে, তা হবে ২০২০ সালের সীমান্ত সংঘাতের কারণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর, তাদের প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ।

ভারত অবশ্য বারবার বলছে যে, ঐ সংঘর্ষের আগে হিমালয় সীমান্তে যে স্থিতাবস্থা ছিল,তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত চীনের সাথে সম্পর্কের উন্নতি হবে না। তবে, লাদাখ থেকে সর্বশেষ সেনা প্রত্যাহারের ফলে নতুন করে কিছুটা আশাবাদ দেখা দিয়েছে।

XS
SM
MD
LG