অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

নিরাপত্তার পরিবর্তনশীল গতি-প্রকৃতি স্থিতিশীল উন্নয়নের বাধা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২২ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন শেখ হাসিনা। রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২।
ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২২ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন শেখ হাসিনা। রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “যে কোনো সংঘাত বা সংকট বিশ্বের প্রতিটি জাতিকে প্রভাবিত করে। বর্তমান বিশ্বে নিরাপত্তার গতি-প্রকৃতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং দিন দিন জটিল হচ্ছে। এটি দেশগুলোর নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীল উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভাবে বাধা দেয়।”

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ৪৬তম ইন্দো-প্যাসিফিক আর্মিস ম্যানেজমেন্ট সেমিনার (আইপিএএমএস)-২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সেমিনারে তিনি ভার্চুয়াল প্লাটফরমে যুক্ত হন।

যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যৌথভাবে এই সেমনিারের আয়োজন করেছে। এতে, ইউএস আর্মি’র প্যাসিফিক কমান্ডারসহ ২৭টি দেশের প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।

মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশকে কীভাবে প্রভাবিত করছে, সেমিনারে তা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রোহিঙ্গাদের নিজেদের দুর্দশা ছাড়াও, তাদের দীর্ঘদিনের উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং সামাজিক-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “উন্নয়ন, শান্তি ও নিরাপত্তা বিশ্বের প্রায় সব দেশের প্রধান নীতিগত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুটি দেশগুলোকে টেকসই উন্নয়নের জন্য শক্তিশালী সহযোগিতার দিকে নিয়ে গেছে। এটি যোগাযোগ, সংলাপ এবং শীর্ষ বৈঠকের বেসামরিক এবং সামরিক কূটনৈতিক পথ প্রশস্ত করেছে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আইপিএএমএস একটি অনুরূপ বহুজাতিক প্ল্যাটফর্ম; যা বন্ধুত্ব এবং উষ্ণতার অনুভূতি তৈরি করতে পারে; যাতে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করে। আইপিএএমএস সব সময় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বন্ধুত্ব, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “আমি মনে করি, এই ফোরামের মাধ্যমে পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া বাস্তবসম্মত বহু-পার্শ্বিক সমাধানে পৌঁছানোর জন্য সাধারণ স্বার্থের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে সহায়তা করবে।”

শেখ হাসিনা আরও বলেন, “যে কোনো দেশের সেনাবাহিনী সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করার অন্যতম উপাদান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সময়ের সাথে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি করেছে। শান্তি সহায়তা কার্যক্রমে অবদানের জন্য বাংলাদেশ আজ বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত।”

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘ মিশনে এবং বিশ্বের যে কোনো স্থানে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। এটা একটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা যে, বাংলাদেশ সর্বদা বৈশ্বিক শান্তি বজায় রাখতে সহায়তা করবে।”

“আমাদের সামরিক বাহিনী জাতিসংঘের অধীনে বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। আমরা এটা বজায় রাখতে চাই;” বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বিশেষ করে দারিদ্র্য হ্রাস, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লিঙ্গ-সমতা, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসসহ আরও কিছু সূচকে এই পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ যেহেতু শান্তির সুবিধায় বিশ্বাসী এবং জনগণের শক্তির ওপর নজর দিয়েছে, তাই অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় আমাদের বৈদেশিক নীতি থেকে শক্তি নিয়ে বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক অংশীদারদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছি।”

XS
SM
MD
LG