অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আসুন আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারিত্বে হাত মেলাই: যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে এবং বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতির সুযোগ গ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন,“আসুন আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারিত্বের জন্য হাত মেলাই।”

শেখ হাসিনা বলেন, “আমি যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল, ওষুধ, ভারী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক সার, আইসিটি, সামুদ্রিক সম্পদ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরিতে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানাতে চাই।”

লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের পলিসি গোলটেবিল বৈঠকে দেওয়া বক্তব্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের একটি উদার বিনিয়োগ নীতি আছে। যার মধ্যে রয়েছে বিদেশী বিনিয়োগ সুরক্ষা, কর অবকাশ, রয়্যালটির জন্য রেমিটেন্স, অনিয়ন্ত্রিত প্রস্থান নীতি, লভ্যাংশের সম্পূর্ণ প্রত্যাবর্তন, প্রস্থানের ওপর মূলধন এবং অন্যান্য সুবিধা।”

শেখ হাসিনা বলেন, “বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, আসুন আমরা আবারও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য পারস্পরিক অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারিত্বের জন্য হাত মেলাই।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং বেশ কয়েকটি হাই-টেক পার্ক স্থাপন করা হয়েছে। ছয় লাখের বেশি ফ্রিল্যান্সিং আইটি পেশাদার থাকার কারণে বাংলাদেশ আইটি বিনিয়োগের জন্য সঠিক গন্তব্য। অধিকন্তু, প্রতিযোগিতামূলক মজুরিতে দক্ষ মানবসম্পদ বাংলাদেশে একটি অতিরিক্ত সুবিধা। এমনকি যদি প্রয়োজন হয়, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নিবেদিত 'বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল' প্রস্তাব করতে পারলে খুশি হব। আমি বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা ও রপ্তানি ক্ষেত্র বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশের পর্যাপ্ত সহায়তা প্রয়োজন। আমি নিশ্চিত যে যুক্তরাষ্ট্র এই চ্যালেঞ্জিং প্রচেষ্টায় আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশীদার হতে পারে। আর, আঞ্চলিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় অগ্রগামী দেশ। তার কৌশলগত অবস্থান, বাংলাদেশকে এই অঞ্চলের একটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র হওয়ার অসাধারণ সম্ভাবনা প্রদান করে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ চার বিলিয়ন মানুষের সম্মিলিত বাজারের কেন্দ্রে অবস্থান করে। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চাবিকাঠি। বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক, তৃতীয় বৃহত্তম সবজি উৎপাদনকারী, চতুর্থ বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী এবং পঞ্চম বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ মৎস্য উৎপাদনকারী দেশ।”

শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ তার প্রতিবেশী ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বৈশ্বিক অংশগ্রহণকারীদের সাথে ধারাবাহিকভাবে অর্থনৈতিক কূটনীতি চালিয়ে যাবে। আমরা ক্রমাগত আমাদের ভৌত, আইনি ও আর্থিক অবকাঠামো উন্নত করছি এবং দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করছি।”

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ গত ১৩ বছরে বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, পুষ্টি, মা ও শিশু স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা এবং আইসিটি ক্ষেত্রে একটি অনুকরণীয় আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশ সরকার দেশে শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে। আইএলও রোডম্যাপ উদ্বেগ মোকাবেলার জন্য, কর্মের একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ও সময়রেখা প্রদান করে এবং শ্রম খাতে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার পরামর্শ দেয়। আমার সরকার এই সেক্টরে ক্রমাগত উন্নতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে ব্যাপকভাবে যুক্ত রয়েছে।”

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জানান যে বাংলাদেশে ১২১ মিলিয়ন মানুষ কমপক্ষে দুটি ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে। তিনি কোভ্যাক্স এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ৭৫ মিলিয়নেরও বেশি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দান করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আন্তরিক প্রশংসা করেন।

XS
SM
MD
LG