বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, “দেশের সরকারি কারখানার উৎপাদনশীলতা খুব সীমিত এবং বেশ পুরনো। কিন্তু এসব কারখানা এমন হওয়া উচিৎ, যাতে সেগুলো নিজ নিজ খাতের উৎপাদনশীলতায় মডেল হয়ে ওঠে।” তিনি বলেন, “এসডিজিতে আমাদের উৎপাদনশীলতার টার্গেট দ্বিগুণ করার কথা। এসডিজি অর্জনে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।”
রবিবার (২ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবসের আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “সরকারি কারখানা যদি কম উৎপাদনশীলতার বা খারাপের মডেল হয়ে উঠে, তাহলে তা খুবই দুঃখজনক। সেজন্য সরকারি শিল্প-কারখানাগুলো জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার মধ্যে দিয়ে পরিচালনা করতে হবে।”
কৃষিমন্ত্রী বলেন, “একটি সমন্বিত স্টাডি করে দেখা দরকার, সরকারি শিল্প-কারখানার কোনটির উৎপাদনশীলতা ভাল, কোনটির কম। জাতির সামনে সে স্টাডি তুলে ধরতে হবে। একই সঙ্গে, বেসরকারি শিল্প-কারখানাগুলোর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে জোর দিতে হবে।”
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “কৃষিতে আগে উৎপাদনশীলতা অনেক কম ছিল। উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা এখন অনেক বেড়েছে। আগে এক বিঘা জমিতে চার থেকে পাঁচ মণ ধান হতো, এখন সেটা ১৭-১৮ মণ হয়েছে। এই উৎপাদনশীলতা বাড়ার ফলেই, প্রায় ১৭ কোটি মানুষের খাবারের যোগান সম্ভব হচ্ছে। তবে উৎপাদনশীলতা আরও বাড়ানো সম্ভব। আমাদের বিজ্ঞানীরা কিছু জাত, যেমন ব্রিধান ৮৯, ৯২, উদ্ভাবন করেছে। তার ফলন বিঘায় ৩০ মণের বেশি।”
উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিক্স, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অন্যান্য চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি ব্যবহারের আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তি এসেছে। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে আমরা এই সুবিধাগুলো কতটা কাজে লাগাতে পারি, সেটা মূল্যায়নের সময় এসেছে। এসডিজিতে আমাদের উৎপাদনশীলতার টার্গেট দ্বিগুণ করার কথা। সেটা খুব বড় চ্যালেঞ্জ। সেটা মাথায় নিয়ে কাজ করতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের এই টার্গেট অর্জন করতে হবে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, “উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সেরা অবস্থানে রয়েছে। সামগ্রিক অর্থনীতিতে শিল্পের অবদান এখন ৩৭ শতাংশ।”
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এটুআইর হেড অফ টেকনোলজি ফারুক আহমেদ জুয়েল।