নাইজেরিয়াতে প্রবল বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে এবং ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বন্যায় খামার ও সড়ক ডুবে গেছে এবং খাবার ও জ্বালানির চালানের গতি ধীর হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ জনজীবনকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে নাইজেরীয়দের জীবনধারণ ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নাইজেরিয়ার ৩৬টি রাজ্যের মধ্যে ৩৩টিতে ২০ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।
তারা বন্যার কারণ হিসেবে জুলাই মাস থেকে শুরু হওয়া মৌসুমী বৃষ্টিপাত ও ক্যামেরুনের লাগদো বাঁধ থেকে পানি ছেড়ে দেবার ঘটনাকে দায়ী করেন।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, নাইজেরিয়ার দুর্বল নগরায়ন পরিকল্পনার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় বন্যার পানিতে দালানের ছাদও ডুবে গেছে, ফলে পুরো লোকালয় পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
এ সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি জরুরী সেবাদাতাদের তাদের কার্যক্রমের কলেবর বাড়ানোর নির্দেশ দেন এবং জানান, সবচেয়ে খারাপভাবে আক্রান্ত এলাকাগুলোতে বন্যার নেতিবাচক প্রভাব কমাতে ১২ মেট্রিক টন পর্যন্ত খাদ্যশস্য পাঠানো হচ্ছে।
তবে আশ্রয়কেন্দ্রের কর্মকর্তারা নিশ্চিত নন কখন এই ত্রাণ এসে পৌঁছাবে, এবং তারা জানিয়েছেন, নতুন করে আসা ত্রাণ সংরক্ষণের জন্য জায়গা দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাষ মতে এ বছরের শেষ নাগাদ বন্যার কারণে খাবারের দাম ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। তারা আরও জানান, এই ধারা আগামী বছর পর্যন্ত চলতে পারে।
নাইজেরিয়ার কর্তৃপক্ষ নভেম্বরে ক্যামেরুনের সঙ্গে লাগদো বাঁধ থেকে মাঝে মাঝে পানি ছাড়ার বিষয়ে আলোচনা করার পরিকল্পনা করছেন।
কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, তারা নভেম্বরে মিশরে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন (কপ২৭) এ জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কৌশলের দিকে নজর রাখবে।
তবে এসব উদ্যোগ সাফল্যের দেখা পাওয়ার আগে দেশটির হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ জীবনের মৌলিক চাহিদা, যেমন খাদ্য, আশ্রয় ও বিশুদ্ধ পানির জন্য নিরন্তর সংগ্রাম করতে থাকবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।