নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতি ঠেকানোর উদ্দেশ্যে ইউরোপীয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা ইসিবি) আবার ব্যাপকভাবে সুদহার বৃদ্ধি করেছে। বৃহস্পতিবার এই সুদহার বৃদ্ধি করা হয়, যা কিনা ইউরো মুদ্রার ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে সুদহার বৃদ্ধি। এর ফলে এমন প্রশ্ন উঠেছে যে, মন্দার হুমকিতে থাকা অর্থনীতি সামাল দিতে ব্যাংকটি কতদুর পর্যন্ত যাবে।
ফ্রাঙ্কফুর্টে এক বৈঠকে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট পরিচালনা পরিষদটি তাদের সুদহারের মাত্রাগুলোকে এক শতাংশ পয়েন্টের তিন-চতুর্থাংশ বৃদ্ধি করেছে, যা কিনা তাদের গতমাসের রেকর্ড বৃদ্ধির সমান। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের মত ইসিবি-ও ভোক্তাপর্যায়ে মূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে ধারাবাহিকভাবে দ্রুত সুদহার বৃদ্ধি করল।
ইসিবি’র প্রেসিডেন্ট ক্রিসটিন ল্যাগার্ড বৈঠকটির পর সংবাদদাতাদের বলেন, “মূল্যস্ফীতি অত্যন্ত উচ্চপর্যায়ে রয়েছে এবং বেশ সময় ধরে আমাদের লক্ষ্যমাত্রার উপরে থাকবে।” ব্যাংকের নীতিনির্ধারকরা “সময়মত মূল্যস্ফীতির [২% লক্ষ্যমাত্রায়] ফিরে আসা নিশ্চিত করতে সুদহার আরও বাড়ানোর আশা করছেন।”
ইসিবি মাত্র তিনমাসে ১৯ দেশবিশিষ্ট ইউরো অঞ্চলের জন্য সুদহার পূর্ণ ২ শতাংশ পয়েন্ট বৃদ্ধি করেছে। এর আগে সুদহার এই পরিমাণে বৃদ্ধি করতে ২০০৫-২০০৭ সালে ১৮ মাস নেওয়া হয়েছিল এবং তার আগে ১৯৯৯-২০০০ সালে ১৭ মাস সময় নেওয়া হয়েছিল।
বিশ্বজুড়েই কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো দ্রুত সুদহার বৃদ্ধি করছে। এই সুদহার ব্যবসা ও ভোক্তাদের জন্য ঋণের ব্যয় নির্ধারণ করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর উদ্দেশ্য হল লাফিয়ে বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতি ঠেকানো। এমন মূল্যস্ফীতির কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে জ্বালানির উচ্চমূল্য, মহামারী পরবর্তী সরবরাহজনিত সমস্যা, এবং কোভিড-১৯ এর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর পণ্য ও সেবার চাহিদা আবার চাঙা হয়ে উঠা। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক গতমাসে পরপর তিনবারের মত সুদহার এক শতাংশ পয়েন্টের তিন-চতুর্থাংশ বৃদ্ধি করেছে।