অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশকে বাণিজ্যিকভাবে এলএনজি সরবরাহে সহায়তার আশ্বাস সৌদি আরবের


সমুদ্রে নোঙ্গর করা একটি হাইড্রোজেন ইঞ্জিন চালিত গ্যাস ট্যাঙ্কসহ তরল প্রাকৃতিক গ্যাস ট্যাঙ্কার, এলএনজি সরবরাহ করছে। (ফাইল ছবি)
সমুদ্রে নোঙ্গর করা একটি হাইড্রোজেন ইঞ্জিন চালিত গ্যাস ট্যাঙ্কসহ তরল প্রাকৃতিক গ্যাস ট্যাঙ্কার, এলএনজি সরবরাহ করছে। (ফাইল ছবি)

জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে সৌদি আরব।

বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের ১৪তম সভা রিয়াদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রিয়াদের ডিজিটাল সিটিতে, ৩০-৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত যৌথ কমিশনের সভায় এই আশ্বাস দেওয়া হয়।

সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান। সৌদি আরবের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ড. আব্দুল্লাহ বিন নাসের বিন মোহাম্মাদ আবুথনাইন।

সভায়, বালানি সহযোগিতা বৃদ্ধিতে একটি টাস্ক ফোর্স গঠনে দেশ দুটি সম্মত হয়। টাস্ক ফোর্স জ্বালানি খাতে সহযোগিতার বিষয়ে দুদেশের সুবিধাজনক সময়ে নিয়মিত বৈঠক করবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে বাণিজ্যিকভাবে এলএনজি সরবরাহ ও ইষ্টার্ণ রিফাইনারি ইউনিট-২ প্রকল্পে সৌদি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সৌদি আরবকে অনুরোধ জানালে, দেশটি সহযোগিতার আশ্বাস দেয়।

সভায়, সৌদি আকওয়া পাওয়ার-এর বাংলাদেশে ১০০০ মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার ও ৭৩০ মেগাওয়াটের গ্যাস-বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া, দুদেশের নৌ পেশাজীবীদের মধ্যে নিয়োগ, প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং সৌদি আরবের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় এই সভায়।

বাংলাদেশের পক্ষে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। সৌদি পক্ষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন, মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট-এর ডেপুটি আব্দুল রহমান এম আল থুনায়েন।

বৈঠকে এফবিসিসিআই এবং ফেডারেশন অফ সৌদি চেম্বার এন্ড কমার্স-এর মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল গঠনে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে এফবিসিসিআই-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হাবিব উল্লাহ ডন স্বাক্ষর করেন। সৌদি চেম্বার এর পক্ষে ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী তারিক আল হায়দারী সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

সৌদি আরবের স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ থেকে পেশাজীবী নিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এবং সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি ‘এক্সিকিউটিভ প্রোগ্রাম’ বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে সমঝোতা হয়। এছাড়া, দুদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বিজ্ঞান ও শিক্ষার সকল ক্ষেত্রে কার্যকরী দ্বিপাক্ষিক সহায়তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করা হয়।

যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠকে, দুদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইসিটি, কৃষি, পরিবেশ, ধর্মীয় মূল্যবোধ, ইত্যাদি বিষয়ে স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট আলোচনা এবং পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। সভা শেষে একটি যৌথ কার্যবিবরনী স্বাক্ষর করা হয়।

যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠকে, বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে। এছাড়া বাংলাদেশ দূতাবাস ও জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যূলেটের কর্মকর্তারা এতে যোগ দেন।

রবিবার যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের উদ্বোধনী সভায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান বলেন, “সৌদি আরব বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ও ভাতৃপ্রতিম দেশ।” তিনি সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ ও প্রধানমন্ত্রী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

যৌথ কমিশনের পরবর্তী সভা অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়।

XS
SM
MD
LG