অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বরইচারা যুদ্ধ দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত


 ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা
ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা

বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বরইচারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে, সোমবার (৩১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হলো গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা।

ঢাক-ঢোল, কাঁশিসহ অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের বাদনে শুরু হয় অনুষ্ঠান। বাদ্যের তালে তালে লাঠিয়ালরা বাঁশের লাঠি ঘুরাতে ঘুরাতে মাঠে প্রবেশ করেন। শক্ত হাতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার নানা কৌশল প্রদর্শন করেন তারা। মুগ্ধ হন নানা বয়সী শতশত দর্শক।

৩১ অক্টোরব ইউনিয়নের বিল বরইচারা যুদ্ধ দিবস উদযাপন উপলক্ষে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী এই লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। দিনটি উদযাপন উপলক্ষে বিল বরইচারা স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে পতাকা উত্তোলন, দোয়া, স্মৃতিচারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিল বরইচারা অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওহাব অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধকালীন জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর, বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম আবুল মনসুর মজনু এবং সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ।

যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক সহযোগীতায় বরইচারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে চারটি দলের ৬৫ জন সদস্য লাঠি খেলায় অংশ নেন। তারা দুই লাঠি, চার লাঠি, সর্কি খেলা, তলোয়ার ও ছুরিসহ নানান হাতিয়ারে তাদের কলা প্রদর্শন করেন। লাঠি খেলায় একদল শিশু তাদের নৈপুণ্য প্রদর্শন করে।

ষাটোর্ধ আবুল কাশেম বলেন, “এখন নিত্য নতুন খেলা আবিষ্কার হয়েছে। লাঠি খেলা খুব একটা চোখে পড়ে না। ঢোলের শব্দ শুনে চলে এসেছি। অনেক দিন পর খেলা দেখে শৈশব ফিরে পেয়েছি। খুব ভাল লাগছে।”

লাঠিয়াল সরদার শহিদ শেখ বলেন, “ হারিয়ে যাচ্ছে লাঠি খেলা। নতুন কেউ এ খেলায় আসতে চায়না। ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমার নাতনী শারমিনকে লাঠিখেলা শেখাচ্ছি।”

যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, “যুদ্ধ দিবস উপলক্ষে এবং ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলার আয়োজন করা হয়েছে। এতে চারটি দলের ৬৫ জন অংশ নেন। খেলা দেখে সবাই খুশি।”

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৩১ অক্টোবর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বিল বরইচারায়, পাকিস্তানী বাহিনী, আলবদর ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয়েছিল। এ যুদ্ধে, বদরুল ইসলাম বদরের নেতৃত্বে ১৩ জন বীরমুক্তিযোদ্ধা অংশ নিয়েছিলেন।

XS
SM
MD
LG