অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সমকামী বিয়েকে বৈধতা দেওয়ার কথা বিবেচনা করবে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত


নয়াদিল্লীর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে কাজ করছেন একজন মালি, ২২ আগস্ট ২০১৭ (ফাইল ফটো)। আদালতটি সমকামী বিয়েকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য করা আবেদনগুলোর বিষয়ে শুনানি করতে সম্মত হয়েছে।
নয়াদিল্লীর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে কাজ করছেন একজন মালি, ২২ আগস্ট ২০১৭ (ফাইল ফটো)। আদালতটি সমকামী বিয়েকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য করা আবেদনগুলোর বিষয়ে শুনানি করতে সম্মত হয়েছে।

সমকামী যৌন সহবাসকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে – এমন একটি আইনকে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করার চার বছর পর, আদালতটি সমকামী বিয়েকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য করা আবেদনগুলোর বিষয়ে শুনানি করতে সম্মত হয়েছে। এর ফলে দেশটির এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের আরেকটি উল্লেখযোগ্য অধিকার অর্জনের বিষয়ে আশা দেখা দিয়েছে।

দুই আবেদনকারীর মধ্যে একটি হল এক সমকামী যুগল যারা হায়দ্রাবাদে বসবাস করেন। তারা নিজেদের প্রায় এক দশকের সম্পর্কটি আরও পাকাপোক্ত করতে গত ডিসেম্বরে একটি পরস্পর অঙ্গীকার করার অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিলেন।

সুপ্রিয় চক্রবর্তী ও অভয় ড্যাং এর অনুষ্ঠানটিতে স্বাভাবিক, রঙচঙে একটি ভারতীয় বিয়ের সব উপাদানই ছিল। যুগলটি পরস্পর অঙ্গীকার করেন, আংটি অদলবদল করেন এবং তাদের পিতামাতা, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে প্রথাগত আচারআচরণের অনেকগুলোই পালন করেন।

অনুষ্ঠানটি তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল, বিশেষ করে চক্রবর্তীর জন্য, যিনি ছোটবেলা থেকেই বিয়ে করার স্বপ্ন দেখে আসছেন।

তবে বাস্তবে “বিয়েটি” আইনী দৃষ্টিতে তাদের বৈবাহিক অবস্থার কোন পরিবর্তন করেনি।

চক্রবর্তী ও ড্যাং ছাড়াও, দিল্লীতে বসবাসরত এক সমকামী যুগল, যারা কিনা ১৭ বছর ধরে সম্পর্কে জড়িয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন, তারাও সর্বোচ্চ আদালতে সমকামী বিয়ের স্বীকৃতির আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে নিম্ন আদালতে থাকা অনেকগুলো আবেদন সুপ্রিম কোর্টে স্থানান্তর করা হবে।

প্রধান বিচারপতি ডি. ওয়াই. চন্দ্রচূড়-এর নেতৃত্বাধীন এক বেঞ্চ শুক্রবার সরকারকে একমাসের মধ্যে নিজেদের জবাব দাখিল করার আদেশ দেয়।

চন্দ্রচূড় নভেম্বরে প্রধান বিচারপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এলজিবিটিকিউ ও নারী অধিকার বিষয়ে অনেকগুলো প্রগতিশীল রায়ের জন্য তিনি সুপরিচিত। সমকামী সহবাসকে অপরাধ গণ্য করা ঔপনিবেশিক আমলের আইনটি, ২০১৮ সালে পাঁচ বিচারপতির যেই বেঞ্চটি বাতিল করেছিল, সেই বেঞ্চেও ছিলেন চন্দ্রচূড়। বেঞ্চটি আইনটিকে সমর্থনের অযোগ্য হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল।

তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সমকামী বিয়েকে বৈধতা দেওয়ার মত সংবেদনশীল বিষয়ে কি অবস্থান নেয় তা এখনও দেখা বাকি রয়েছে। দলটির সমর্থক গোষ্ঠীর মধ্যে অনেক হিন্দু রয়েছেন।

সমকামী বিয়েকে স্বীকৃতি দেওয়া বেশিরভাগ দেশই ইউরোপ বা আমেরিকায় অবস্থিত। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তাইওয়ানই একমাত্র দেশ যারা সমকামী বিয়েকে বৈধতা দিয়েছে।

XS
SM
MD
LG