রাজশাহীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) বিভাগীয় সমাবেশের আগে ১০ দফা দাবি আদায়ে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় পরিবহন মালিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে রাজশাহী নগরীতে ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
রাজশাহী বাস টার্মিনাল থেকে বিআরটিসির একটি বাস ছেড়ে গেলেও অন্য বাস কাউন্টার বন্ধ পাওয়া গেছে।
নগরীর তালাইমারী মোড়ে বাসের অপেক্ষায় থাকা আশরাফুল ইসলাম ইউএনবি সংবাদদাতাকে বলেন, ‘নাটোর হয়ে বগুড়া যেতে তাঁকে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হবে। ধর্মঘটের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আমার মতো যাত্রীরা’।
রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউর হক টিটু বলেন, ‘ধর্মঘট চলায় রাজশাহী থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি এবং অন্য স্থান থেকে রাজশাহীতে প্রবেশও করেনি’।
নাটোরে সব ধরনের গণপরিবহনের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। যাত্রীদের রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। কিছু যাত্রীকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে গন্তব্যের দিকে যেতে দেখা গেছে।
বুধবার রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের কার্যালয়ে যৌথসভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এ ধর্মঘট পালন করছে।
তারা দাবি করেছেন, বিএনপির সমাবেশের সঙ্গে ধর্মঘটের কোনো যোগসূত্র নেই, কারণ তারা পূর্বেই তাদের দাবি পূরণের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
গত ২৬ নভেম্বর বিভাগীয় পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংহতি পরিষদ ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ১০ দফা দাবি পূরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আল্টিমেটাম দেয়।
সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাতিল এবং মহাসড়কে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অবৈধ থ্রি-হুইলার ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে তারা ধর্মঘটের ডাক দেয়।
অন্যদিকে বুধবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৮ শর্তে সমাবেশের অনুমতি দিলে সমাবেশস্থল মাদরাসা মাঠে জড়ো হতে শুরু করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সমাবেশ আয়োজক কমিটির সমন্বয়ক রুহুল কুদ্দুস দুলু বলেন, ‘দলীয় নেতাকর্মীরা আজ থেকে সমাবেশস্থলে অবস্থান করবেন এবং সমাবেশ সফল করে বাড়ি ফিরবেন’।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহর ও গুরুত্বপূর্ণ শহরে ধারাবাহিক সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে প্রথম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা ছাড়া বিভিন্ন শহরে সব সমাবেশের আগে পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা ধর্মঘটের ডাক দেন।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে তাদের বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।