অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভিওএ,আরএফই/আরএল এর সম্প্রচার নিষিদ্ধকরনে তালিবানের সিদ্ধান্তে নিন্দা জ্ঞাপন


ওয়াশিংটনে অবস্থিত উইলবার জে. কোহেন ভবন। এই ভবনেই ভয়েস অফ আমেরিকার সদর দফতর অবস্থিত। (ফাইল ফটো)
ওয়াশিংটনে অবস্থিত উইলবার জে. কোহেন ভবন। এই ভবনেই ভয়েস অফ আমেরিকার সদর দফতর অবস্থিত। (ফাইল ফটো)

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত দুইটি গণমাধ্যমের এফএম সম্প্রচার নিষিদ্ধ ঘোষণার তালিবানের সিদ্ধান্তটির প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করেছে দ্য কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। প্রতিষ্ঠানটি অবিলম্বে সম্প্রচার পুনরায় চালু করারও অনুরোধ জানায়।

তালিবান সরকারের নিষেধাজ্ঞাটি ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। এর একদিন আগে, তালিবানের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রক জানায় যে, তারা গণমাধ্যমগুলোর সম্প্রচারিত প্রোগ্রাম সম্পর্কে অভিযোগ পেয়েছে, তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন কিছু উল্লেখ করেনি।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নজরদারি সংস্থাটি এক বিবৃতিতে, তালিবানের প্রতি আফগানিস্তানে গণমাধ্যমের উপর “তাদের ক্রমবর্ধমান দমনপীড়ন বন্ধ করার” আহ্বান জানায়।

সিপিজে এশিয়া প্রোগ্রাম পরিচালক, বেহ লিহ য়্যি বলেন, “গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে সর্বসাম্প্রতিক এই দমনপীড়ন পরিষ্কারভাবে দেখিয়ে দেয় যে, আফগানিস্তানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার তাদের অঙ্গীকারে তালিবান পিছপা হচ্ছে।”

নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও শ্রোতাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে সম্প্রচারকরা

ভিওএ হিসেবে পরিচিত ভয়েস অফ আমেরিকার টিভি সম্প্রচারগুলো তালিবান কর্তৃক বন্ধ করে দেওয়ার কয়েকমাস পরই, দেশটিতে এফএম ও মিডিয়ামওয়েভ সম্প্রচারগুলো নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তটি আসল। তবে এই সম্প্রচারকদের দেশটির বাইরে সম্প্রচারিত শর্টওয়েভ ও মিডিয়ামওয়েভ সম্প্রচারগুলো এখনও আফগানিস্তানের শ্রোতাদের কাছে পৌঁছায়। এছাড়াও ডিজিটাল ও স্যাটেলাইট কার্যক্রমগুলোও আফগানিস্তানের মানুষজন দেখতে পারে। তবু, দেশটির ভেতর থেকে সম্প্রচারিত এফএম সম্প্রচারগুলো ব্যাপকমাত্রায় স্থানীয় শ্রোতাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হত।

তালিবানের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র, আবদুল কাহার বালখি ভিওএ-কে দেওয়া এক লিখিত মন্তব্যে এই সম্প্রচারকদের নিষিদ্ধ করার কারণ ব্যাখ্যা করেন।

বালখি লেখেন, “ভিওএ এবং আজাদী রেডিও এই আইনগুলো মানতে ব্যর্থ হয়েছে, বারবার আইন লঙ্ঘনকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, পেশাদারিত্ব প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছে এবং সেকারণে তাদের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”

ভিওএ এবং আরএফই/আরএল নিয়মিতভাবেই মানবাধিকার, মেয়েদের শিক্ষা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক সমস্যা, এবং আফগানিস্তানের গভীর মানবিক সংকটের মত বিষয়গুলো উত্থাপন করত। এই সম্প্রচারকরা বিভিন্ন ধরণের মতামত পেশ করে, যার মধ্যে তালিবান বিরোধী মতামতও রয়েছে।

এক লিখিত বিবৃতিতে ভিওএ’র আফগান সার্ভিস এর প্রধান, হাসিব আলীকোজাই,অনুষ্ঠান সম্পর্কে তালিবানের অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন যে, সংস্থাটি তাদের সম্প্রচারিত বিষয় সম্পর্কে কোন অভিযোগ পায়নি।

আলীকোজাই বলেন, “আমাদের স্টেশনটির সম্প্রচার বন্ধের অজুহাত হিসেবে এগুলো বানোয়াট কারণ। সত্য হল যে, আমরা এমন সমস্যা নিয়ে প্রতিবেদন তুলে ধরতে কার্যকর, যেগুলো স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো তুলে ধরতে পারে না কারণ তারা তালিবানের প্রতিহিংসার ভয়ে থাকে।”

\বাইডেন প্রশাসনও তালিবানের এমন সিদ্ধান্তের প্রতি নিন্দা জানিয়েছে। ভিওএ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, কৌশলগত যোগাযোগ বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সমন্বয়ক, জন কার্বি বলেন যে, স্বাধীন গণমাধ্যমের দমন তালিবানের বৈধতা পাওয়ার লক্ষ্যে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

কার্বি বলেন, “আমরা পক্ষে দাঁড়ানো অব্যাহত রাখব … গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং বিশ্বব্যাপী নাগরিকদের সংবাদ পাওয়ার অধিকারের পক্ষে।”


XS
SM
MD
LG