তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন মঙ্গলবার বলেন যে, গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত এই দ্বীপটি তাদের বৃহদাকৃতির প্রতিবেশী দেশ চীন থেকে যে ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে রয়েছে, সেটির কারণে তাইওয়ান ২০২৪ সাল থেকে বাধ্যতামূলক সামরিক নিয়োগের মেয়াদ চারমাস থেকে বৃদ্ধি করে এক বছর করবে।
প্রত্যাশিত এই পদক্ষেপটি এমন সময়ে নেওয়া হল যখন চীন নিজেদের সার্বভৌমত্বের দাবি জাহির করতে তাইওয়ানের উপর সামরিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করছে। এই চাপ প্রয়োগের মধ্যে রয়েছে বিগত তিন বছর ধরে দ্বীপটির কাছে প্রায় দৈনিক চীনের বিমান বাহিনীর মিশন পরিচালনা।
সাই বলেন যে, তাইওয়ান শান্তি চায় কিন্তু তাদের নিজেদের প্রতিরক্ষা করার সক্ষমতাও প্রয়োজন।
বাধ্যতামূলক নিয়োগের মেয়াদ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করে এক সংবাদ সম্মেলনে সাই বলেন, “যতদিন পর্যন্ত তাইওয়ান যথেষ্ট শক্তিশালী থাকবে, ততদিন তারা বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার আবাসস্থল থাকবে, এবং সেটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হবে না।” তিনি এই সিদ্ধান্তকে “অত্যন্ত কঠিন” হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।
সাই আরও বলেন যে, রিজার্ভ সৈন্যদের প্রশিক্ষণ সহ বর্তমান সামরিক ব্যবস্থাটি চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক হুমকি মোকাবেলা করার জন্য অকার্যকর ও অপ্রতুল, বিশেষত যদি চীন দ্বীপটির বিরুদ্ধে দ্রুতগতির আক্রমণ পরিচালনা করে তাহলে।
সাই জানান, বাধ্যতামূলক নিয়োগপ্রাপ্তরা আরও কঠোর প্রশিক্ষণ পাবেন। এর মধ্যে রয়েছে গুলি চালানোর প্রশিক্ষণ, যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর ব্যবহৃত যুদ্ধ কৌশল বিষয়ক প্রশিক্ষণ, এবং আরও শক্তিশালী অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ, যেগুলোর মধ্যে বিমান-বিধ্বংসী স্টিংগার ক্ষেপণাস্ত্র ও ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।
তাইওয়ান তাদের দ্বীপের উপর চীনের সার্বভৌমত্বের দাবি প্রত্যাখ্যান করে। তাইওয়ান সোমবার তাদের দ্বীপের আকাশসীমা চিহ্নিতকরণ এলাকায় চীনের বিমান বাহিনীর সর্বকালের বৃহত্তম অনুপ্রবেশের খবর জানায়। এদিন চীনের ৪৩টি বিমান এই দুই পক্ষের মধ্যে বিদ্যমান অনানুষ্ঠানিক সীমানাটি অতিক্রম করে ঢুকে পড়ে।
আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পর চীন তাইওয়ানের কাছাকাছি এলাকায় যুদ্ধের মহড়াও করেছিল।