অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও রূপান্তরে যুক্তরাষ্ট্রও গর্বিত অংশীদার—রাষ্ট্রদূত পিটার হাস


বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, ‘গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন লক্ষ্যণীয় এবং যুক্তরাষ্ট্র সেই রূপান্তরের গর্বিত অংশীদার।… আমরা আগামী ৫০ বছর এবং তারপরেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ’।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) পঞ্চম ইন্দো-প্যাসিফিক বিজনেস ফোরামের ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্যানেলে ‘মবিলাইজিং ইনফ্রাস্টাক্চার ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ এন্ড দ্য ইন্দো-প্যাসিফিক’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পঞ্চম ইন্দো-প্যাসিফিক বিজনেস ফোরাম জাপানের রাজধানী টোকিওতে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়।

পিটার হাস বলেন, ‘গত ৫০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং এ ধরনের আরও অনেক সমস্যা মোকাবিলায় ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ প্রদান করে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে অংশীদারত্ব করেছে’।

তিনি বলেন, ‘আমরা আরও দক্ষ লজিস্টিক সিস্টেম তৈরি করতে এবং ক্লিন এনার্জি, বন্দর এবং রেলওয়ের মতো ক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগ আনতে প্রযুক্তিগত সহায়তা কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের সঙ্গে কাজ করছি’।

তিনি বলেন, ‘সমগ্র অঞ্চলের অন্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের মতো বাংলাদেশেও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য অবকাঠামো গুরুত্বপূর্ণ। অবকাঠামো শ্রমিকদের ভালো কাজের সঙ্গে সংযুক্ত করে; ব্যবসা বৃদ্ধি ও উন্নতি লাভের সুযোগ দেয় এবং সমাজের সকল অংশের জন্য সুযোগ তৈরি করে। যার মধ্যে সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়গুলোও রয়েছে’।

পিটার হাস বলেন, ‘কিন্তু উচ্চমানের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য কেবলমাত্র আর্থিক বিনিয়োগই না, এর চেয়েও বেশি কিছু লাগে। এ জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও নীতি কাঠামো, নিয়ন্ত্রক পরিবেশ এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য প্রকল্প গঠনের জন্য মানব ক্ষমতা সমর্থন করার জন্য কাজ করা প্রয়োজন’।

তিনি বলেন, ‘ইতিবাচক প্রভাব নিশ্চিত করতে এর জন্য শক্তিশালী প্রকৌশল, পরিবেশগত, সামাজিক, শাসন ও শ্রমের মান প্রয়োজন’।

পিটার হাস বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক জুড়ে অবকাঠামোর চাহিদা পূরণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি অর্থায়নের বিকল্প প্রয়োজন।… কোনো দেশ একা চলতে পারে না। সে কারণেই ২০২২ সালের জুনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ঘোষণা করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্টের অংশীদারত্বের অংশ হিসেবে অতিরিক্ত ২০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ সংগ্রহ করার লক্ষ্য নিয়েছে’।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সর্বদা বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে উন্নয়ন অর্থায়নের শক্তিশালী সমর্থক।… শেভরন, জিই ও এক্সেলরেটের মতো কোম্পানির বিনিয়োগ বাংলাদেশিদের জন্য ভালো চাকরি সুযোগ তৈরি এবং বাংলাদেশি জনগণকে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহে সহায়তা করেছে’।

পিটার হাস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের বিভিন্ন মানুষের কাছে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা সম্প্রসারণের জন্যও কাজ করছে’। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি সাবকম বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির কাছ থেকে পরবর্তী সমুদ্রের তলদেশে যোগাযোগের তার নির্মাণ করবে।

তিনি বলেন, ‘স্পেসএক্সের স্টারলিঙ্কের মতো উদ্ভাবনী পণ্যগুলো বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবং ইন্দো-প্যাসিফিকজুড়ে নির্ভরযোগ্য উচ্চগতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট অ্যাক্সেস সরবরাহ করতে সহায়তা করতে পারে’।

পিটার হাস বলেন, ‘এই প্রযুক্তিগুলো বাংলাদেশের বিশাল ডিজিটাল ব্যবহারকারীর ভিত্তিকে সমর্থন করতে এবং বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতি সম্প্রসারণে সহায়তা করতে পারে’।

উল্লেখ্য, ইন্দো-প্যাসিফিক বিজনেস ফোরাম জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় এবং ইন্দো-প্যাসিফিক বিজনেস ফোরামের (আইপিবিএফ) সহযোগিতায়; জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে অংশীদারত্বে; যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার এ আয়োজন; ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলজুড়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং এর অংশীদারদের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে উন্নীত করতে, সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি অংশগ্রহণের মূল প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।

জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত এই আয়োজন যুক্তরাষ্ট্র ও ইন্দো-প্যাসিফিক দেশসহ বিভিন্ন দেশ অংশগ্রহণ করে।

XS
SM
MD
LG