অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশের রাইডশেয়ারিং ব্যবস্থাপনার ভেতর-বাহির


জ্যামের শহর ঢাকায় স্বস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাত্রা শুরু করা রাইডশেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে অভিযোগের পাহাড় যাত্রীদের। শুরুর দিনগুলোতে অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রীসেবা মিললেও দিনকে দিন 'খ্যাপে' (চুক্তিভিত্তিক) ঝুঁকতে থাকেন অধিকাংশ কোম্পানির রাইডার। যাত্রীরা বলছেন, এখন অবস্থা এমনই যে চুক্তিতে গন্তব্যে যেতে চাইলেও আকাশচুম্বী ভাড়ার প্রস্তাবে নাজেহাল হতে হয়। এসব বিষয়ে অনেকে অ্যাপের মাধ্যমে অভিযোগ করে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেন, অনেকে আবার কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত তথ্য বা তদারকি সংস্থার বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দেশটির সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "একটু কষ্ট করে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত যাত্রীরা লেগে থাকলে অভিযোগের সঠিক সমাধান পাবেন।" তার দাবি, অধিকাংশ সময় যাত্রীরা ঠিকমতো অভিযোগ করেন না। অন্যদিকে রাইডশেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলো ভাড়ায় হেরফেরের বিষয়ে যুক্তি দিয়ে বলছে, ‘‘দূরত্ব এবং সময়ের চূড়ান্ত হিসাবের তারতম্যের কারণে সম্ভাব্য ভাড়ার চেয়ে অনেক সময় ‘আসল’ ভাড়ায় পার্থক্য দেখা যায়।’’

যে ধরনের বিড়ম্বনায় পড়েন যাত্রীরা

নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের অর্গানাইজিং সেক্রেটারি এসএম আজাদ হোসেন নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলছিলেন, "রাইডশেয়ারিংয়ের প্রথম সমস্যা হচ্ছে তারা এখন খুব একটা অ্যাপে যেতে আগ্রহ বোধ করে না। ভাড়া দ্বিগুণ-তিনগুণ দাবি করে। কয়েক দিন আগে এয়ারপোর্ট থেকে বিআরটিএ ভবন পর্যন্ত যাওয়ার সময় আমি বাস পাচ্ছিলাম না। কারণ সেদিন বিশ্ব ইজতেমা ছিল। আমি এক রাইডশেয়ারকে আসতে অনুরোধ করলে চালক আমার কাছে ৬০০ টাকা দাবি করে বসেন। আমি তাকে রাইডশেয়ারিংয়ের নীতিমালা, আইনের কথা বলার পরেও আমাকে ৪০০ টাকার নিচে আনতে রাজি হলেন না। শেষ পর্যন্ত ৪০০ টাকা দিয়েই যেতে হয়েছে।’’

মোহাম্মদপুর এলাকার ইখলাসুর রহমান নামের এক চাকুরীজীবী জানালেন আগে তিনি নিয়মিত উবার কিংবা পাঠাও অ্যাপ ব্যবহার করতেন। সপ্তাহ খানেক হলো অ্যাপ দুটি আনইন্সটল করে দিয়েছেন। কারণ জানতে চাইলে তিনি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "অ্যাপে গাড়ি সার্চ করলে পেতে পেতে অনেক সময় লাগে। আবার পেলেও চালক ফোন করে গন্তব্য জানতে চান। তার মনমত না হলে ট্রিপ ক্যানসেল করার অনুরোধ জানান। এত ঝামেলা ভালো লাগে না।"

ইখলাসুরের অভিযোগ, "কিছুদিন আগে আসাদগেট থেকে বিমানবন্দর এলাকায় যাওয়ার সময় এক বাইকার ট্রিপ ক্যানসেল করে সাড়ে চারশো টাকা দাবি করেন! প্রাইভেটকারে আরো বিপদ। সম্ভাব্য ভাড়া যা দেখায় গন্তব্যে পৌঁছানোর পর প্রায়ই তা অনেক বেড়ে যায়।"

ভাড়ার পুরনো নীতিমালা নিয়ে বিতর্ক

কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাইডশেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিআরটিএ থেকে ‘এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট’ নিতে হয়। এ জন্য ২০১৭ সালে একটি নীতিমালা করা হয়েছিল। বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানিয়েছেন, সেই নীতিমালার আলোকে এখন পর্যন্ত তারা ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে রাইডশেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট দিয়েছেন।

প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম: পিকমি লিমিটেড, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেড, ওভাই সলিউশনস্ লিমিটেড, চালডাল লিমিটেড, পাঠাও লিমিটেড, ইজিয়ার টেকনোলজিস লিমিটেড, আকাশ টেকনোলজি লিমিটেড, সেন্টো লিমিটেড, সহজ লিমিটেড, উবার বাংলাদেশ লিমিটেড, বাডি লিমিটেড, আকিজ অনলাইন লিমিটেড, যাত্রী সার্ভিসেস লিমিটেড, ডিজিটাল রাইড লিমিটেড ও এশিয়ান ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক লিমিটেড।

তিনি বলেন, "২০২১-২২ অর্থবছরে মোট ৪ হাজার ৫৩২টি মোটরযানের বিপরীতে রাইডশেয়ারিং মোটরযান এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে।"

প্রতিষ্ঠানগুলোকে যাত্রীদের থেকে ভাড়া আদায়ে ২০১০ সালের ট্যাক্সিক্যাব সার্ভিস গাইডলাইন মানতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। ১৩ বছর আগের সেই নীতিমালা প্রায়ই মানতে চায় না প্রতিষ্ঠানগুলো। যাত্রীরাও বিভ্রান্তিতে পড়ার অভিযোগ তোলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নুর মোহাম্মদ মজুমদার ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "নীতিমালা ২০১০ সালেরটাই আছে। আমরা একটা কমিটি গঠন করে দিয়েছি। নীতিমালা হালনাগাদ করার জন্য কমিটি কাজ করছে। রাইডশেয়ারিংয়ের পক্ষ থেকেও দাবিটা আসছে। এমনকি যারা লুজার তাদের পক্ষ থেকে বিষয়টি আসছে। আর মিডিয়া থেকে তো আসছেই। কমিটি কাজ করছে নীতিমালা হালনাগাদ করার।"

যেভাবে অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়

যাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘তাদের (রাইডশেয়ারিং প্রতিষ্ঠান) বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে অনলাইনের বিভিন্ন মাধ্যম যেমন হটলাইন থেকে শুরু করে ওয়েবসাইটে গিয়ে আমাদের কাছে কমপ্লেইন করতে পারে। সেই কমপ্লেইনের ভিত্তিতে আমরা অ্যাকশন নিচ্ছি। এখন রাইড শেয়ারিংয়ের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, বাসের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টিও এখানে আসে। এসব থামাতে ইটিকেটিং চালু হচ্ছে। কোথায় উঠছেন, কোথায় নামছেন এসব ডকুমেন্টস যাত্রীর কাছে থাকছে। যদি বেশি ভাড়া নেওয়া হয়, তাহলে এসব দিয়ে অভিযোগ করেন। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।’’

মালিকপক্ষের দাবির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘মালিকপক্ষের বক্তব্য হলো অনেকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন, এর কোনো ভিত্তি নেই।’’

‘‘যেকোনো অভিযোগের ব্যাপারে আপনি কঠোর হলে পিছিয়ে গেলে হবে না। কষ্ট একটু করতে হবে। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত রেজাল্ট না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকতে হবে। পিছিয়ে গেলে হবে না। তাহলে আপনি বেটার রেজাল্ট পাবেন।’’

বিআরটিএ’র আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানিয়েছেন, নিষ্পত্তি হওয়া অভিযোগের বিষয়ে প্রতি মাসে বিআরটিএ-কে লিখিত তথ্য পাঠায় রাইডশেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলো।

যাত্রীদের অভিযোগ এবং তাদের ব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানতে চাইলে ভয়েস অফ আমেরিকার প্রশ্নের জবাবে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠিয়েছে উবার।

উবার বলছে, ‘‘আমরা দুই, তিন বা চার চাকার যানবাহনের জন্য আমাদের সব সেবা নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী মূল্যের রাইড সরবরাহ করে যাচ্ছি। সম্ভাব্য সময় এবং দূরত্বের হিসাব করতে একটি অ্যালগরিদম ব্যবহার করে উবার সব সময় সঠিক ভাড়া নির্ধারণ করে। আমরা বাংলাদেশের ট্যাক্স সংক্রান্ত সব নিয়ম মেনে ভাড়া নির্ধারণ করে থাকি।’’

অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে তাদের জবাব এমন, ‘‘বর্ধিত সময় এবং দূরত্বের কারণে চূড়ান্ত ভাড়ায় পরিবর্তন আসতে পারে। এক্ষেত্রে যাত্রীরা ট্রিপ রসিদে ভাড়ার ব্রেক-আপ সংক্রান্ত তথ্য দেখতে পারেন।’’

অনায্যভাবে কারো থেকে বেশি ভাড়া নেওয়া হলে অ্যাপের মাধ্যমে রিফান্ডের সুযোগ আছে জানিয়ে উবার বলছে, "যদি কোনো বিষয়ে শঙ্কা দেখা দেয়, তাহলে যথাযথ সমাধান পেতে আমরা যাত্রীদের অ্যাপের মাধ্যমে সময়মতো অভিযোগ করার আহ্বান জানাই। প্রতিটি অভিযোগই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয়।’’

পাঠাও লিমিটেডের সিইও ফাহিম আহমেদ দাবি করেছেন, তারা কখনো যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেন না। ভয়েস অফ আমেরিকাকে তিনি বলেন, "যাত্রা শুরুর পূর্বে সম্ভাব্য যে ভাড়া অ্যাপে প্রদর্শন করা হয়, দূরত্ব ও সময়ের ব্যতিক্রম ছাড়া সেই ভাড়া অপরিবর্তিত হারে আদায় করা হয় এবং সেই একই পরিমাণ ভাড়াই যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়। আমরা সবসময় রাইডশেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা, ২০১৭ অনুসরণ করেই প্রাক্কলিত ভাড়া কিংবা দূরত্ব ও সময়ের ব্যতিক্রম হলে পরিবর্তিত ভাড়া নির্ধারণ করে থাকি। তবে কারিগরি ত্রুটির কারণে ভাড়া কমবেশি হলে অভিযোগ জানানোর সঙ্গে সঙ্গে তা নিষ্পত্তি করা হয়।’’

তিনি বলেন, "পাঠাও রাইডারদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ (বাংলাদেশের সর্বনিম্ন) হারে কমিশন আদায় করে। রাইডার বারবার রাইড বাতিল করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে তার রাইড পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।’’

সেবা নিয়ে যাত্রীদের কোনো অভিযোগ থাকলে সেটি কীভাবে, কতদিনের মধ্যে সমাধান করা হয়, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "যাত্রী ও রাইডারদের নিরবচ্ছিন্ন তথ্যপ্রদান ও অভিযোগ উত্থাপন করার জন্য পাঠাও লিমিটেডের চার ধরণের ব্যবস্থাপনা রয়েছে: এক. প্রতিটি ট্রিপ শেষে অ্যাপের মাধ্যমে রিপোর্ট ইস্যু করা হয়। দুই. পাঠাওয়ের ২৪/৭ কল সেন্টারে ফোন করে কেউ সমাধান পেতে পারেন। তিন. পাঠাওয়ের ফেসবুক পাতায় চালু থাকা ১২ ঘণ্টা (সকাল ১০.০০টা থেকে রাত ১০.০০টা) চ্যাট সার্ভিসের মাধ্যমে সমাধান পেতে পারেন। চার. ঢাকা শহরে পাঠাওয়ের ১০টির বেশি ওয়াক ইন সাপোর্ট সেন্টার আছে, রাইডাররা যেখানে সশরীরে গিয়ে নিজেদের অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে পারেন।"

আপনাদের সমাধান যাত্রীদের পছন্দ না হলে তখন কোথায় অভিযোগ জানাতে হয়, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটি)-এর কমপ্লেইন ড্যাশবোর্ডে অভিযোগ করা যায় এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ উত্থাপন করা যায়। রাইডশেয়ারিং প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের উপস্থিতিতে অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা এসব অভিযোগের মীমাংসা করেন। ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে পাঠাওয়ের অভিযোগ নিষ্পত্তির হার ৯৯.২৫ শতাংশ। অন্যদের থেকে এই হারে তারা বেশ এগিয়ে।"

চালক নিয়োগের প্রক্রিয়া

পাঠাও সিইও ফাহিম আহমেদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাদের নিবন্ধিত মোটরসাইকেল চালকের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার এবং কার চালকের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। রাইডাররা (মোটরসাইকেল/কার চালক) ফ্রিল্যান্সিং ভিত্তিতে রাইড সেবা প্রদান করেন। রাইডশেয়ারিং প্রতিষ্ঠান থেকে চালক নিয়োগ দেয়া হয় না। রাইডশেয়ারিং নীতিমালায় নির্দেশিত ফর্মে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, হালনাগাদ ফিটনেস সার্টিফিকেট, হালনাগাদ ট্যাক্সটোকেন, চালকের হালনাগাদ ড্রাইভিং লাইসেন্স, মালিক ও চালক উভয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র, মালিকের টিআইএন সার্টিফিকেট ইত্যাদি)) এবং প্রযোজ্যক্ষেত্রে জমাদানপূর্বক বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বরাবর আবেদন করে রাইডশেয়ারিং মোটরযান এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হয়। আবেদন করার ক্ষেত্রে রাইডারদের সাহায্য করে থাকে অ্যাপগুলো।

পাঠাওয়ের ট্যাক্স প্রক্রিয়া কী? কীভাবে পাঠাও সরকারকে ট্যাক্স পরিশোধ করে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফাহিম বলেন, ‘‘পাঠাও লিমিটেড প্রচলিত আইন অনুযায়ী এবং সরকার নির্ধারিত হারে নিয়মিতভাবে ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রদান করে। বিভিন্ন খাত ও পদ্ধতিতে ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রদান করা হয়:

১. বিক্রয়/রেভিনিউ ভ্যাট: মাসিক রেভিনিউ হিসাব করে পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়।

২. এক্সপেন্স/খরচ ভ্যাট: প্রত্যেক মাসের খরচের ওপর পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে খরচ-

সংক্রান্ত ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়।

৩. অন্যান্য ভ্যাট: পাঠাও বাকি সব খরচের বিপরীতে ভ্যাটসহ খরচের টাকা বিক্রেতাকে প্রদান করে এবং বিক্রেতা তা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে পাঠাওকে চালান প্রদান করেন:

৪. কর্পোরেট ট্যাক্স: প্রতি বছর কোম্পানির লাভ-ক্ষতি বা ন্যূনতম রেভিনিউর ওপর ভিত্তি করে সরকার নির্ধারিত হারে কর্পোরেট ট্যাক্স সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়।

৫. এমপ্লই স্যালারি ট্যাক্স: প্রতি মাসের এমপ্লই স্যালারি থেকে উৎসে কর কেটে পরবর্তী মাসের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়।

৬. এক্সপেন্স/খরচ ট্যাক্স: প্রযোজ্য খরচ থেকে উৎসে কর মাসিক ভিত্তিতে কেটে পরবর্তী মাসের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়।

৭. অন্যান্য ট্যাক্স: প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ট্যাক্সসহ খরচের টাকা বিক্রেতাকে প্রদান করে এবং বিক্রেতা তা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে পাঠাওকে চালান প্রদান করে।

৮. প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে পূর্ববর্তী মাসে মোট জমাকৃত ভ্যাটের বিপরীতে জাতীয় রাজস্ববোর্ড বরাবর ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয়া হয় এবং প্রতি মাসে মোট জমাকৃত ট্যাক্সের বিপরীতে পরবর্তী মাসের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বরাবর ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেয়া হয়। এছাড়া প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর ছয় মাসের মোট জমাকৃত ট্যাক্স-এর বিপরীতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বরাবর নিয়মানুযায়ী ফরম ৭৫-এ রিটার্ন জমা দেয়া হয়।

অ্যাপ ইন্সটলে হরেক শর্ত

রাইডশেয়ারিং অ্যাপগুলো ফোনে ইন্সটল করতে গেলে নানা ধরনের শর্ত মানতে হয়। শর্তগুলো অনেকে না পড়েই অ্যাপগুলোকে অনুমতি দিয়ে দেন।

দুই শীর্ষ রাইডশেয়ারিং প্রতিষ্ঠান পাঠাও এবং উবারের অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে দেওয়া প্রাইভেসির তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, যে মোবাইল দিয়ে আপনি তাদের সেবা নিবেন তার প্রায় সব ধরনের তথ্য প্রতিষ্ঠান দুটি সংগ্রহ করে। মোবাইলটির হার্ডওয়্যার মডেল থেকে শুরু করে আইপি অ্যাড্রেসের তথ্য পর্যন্ত তারা সংগ্রহ করে।

অ্যাপ ব্যবহারের সময় যে নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর এবং মেইল অ্যাড্রেস দেওয়া হয়, সেগুলোও তারা সংগ্রহ করে রাখে। এছাড়া লোকেশন ফিচারের কারণে অ্যাপগুলো সার্বক্ষণিকভাবে আপনার চলাচলের তথ্য নিতে পারে। শুধু তাই নয়, আপনার মোবাইলে সেইভ করা কন্টাক্ট লিস্টও তারা সংগ্রহ করতে পারে।

অ্যাপগুলো তাদের ওয়েবসাইটে দাবি করেছে, সেবার গুণগত মান বাড়াতে গ্রাহকের এসব তথ্য 'Anonymous Data' হিসেবে সংগ্রহ করা হয়।

ব্যক্তিগত তথ্যের এই অ্যাকসেসের বিষয়ে জানতে চাইলে পাঠাও সিইও ফাহিম আহমেদ বলেন, ‘‘আমরা দেশের প্রচলিত আইন এবং আমাদের প্রাইভেসি পলিসি অনুযায়ী ন্যূনতম ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশাধিকার নিয়ে থাকি এবং যাত্রীদের কাছ থেকে সংগৃহীত ব্যক্তিগত তথ্যের সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করি।’’

XS
SM
MD
LG