অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সরকারের দিন ঘনিয়ে আসছে—বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল


নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের দিন ঘনিয়ে এসেছে। কারণ জনগণ নির্বাচনের নামে আর কোনো নাটক করতে দেবে না।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “এই সরকারের দিন শেষ হয়ে গেছে... এবার তাদের যেতে হবে”।

তিনি বলেন, “যারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নানাভাবে দমন-পীড়ন চালিয়েছে, তাদের সেই ঋণ শোধ করতে ক্ষমতা ছাড়তে হবে”।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, “বর্তমান সরকার ছদ্মবেশে একদলীয় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করে পরিকল্পিতভাবে জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সুতরাং, তারা একটি নির্বাচনের নামে নাটক এবং উপহাস করতে চায় ... যে নির্বাচন এই দেশে আর হবে না কারণ মানুষ এখন তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে প্রস্তুত”।

মির্জা ফখরুল বলেন, “জনগণের সঙ্গে বর্তমান অনির্বাচিত সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই এবং তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের টাকা লুটপাট করা। কারণ তারা বাংলাদেশকে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি এবং দেশের জনগণকে তাদের প্রজা মনে করে”।

বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। দল ও এর অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “শক্তিশালী আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত না হলে আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়বে না। আমরা এই শাসনকে ক্ষমতা থেকে সরাতে জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করছি”।

তিনি আরও বলেন, “যতদিন আওয়ামী লীগ পদত্যাগ না করবে এবং যতদিন গ্রেপ্তার বিএনপি নেতাদের জেল থেকে মুক্তি না দেওয়া হবে, ততদিন তাদের চলমান আন্দোলন চলবে”।

মির্জা ফখরুল বলেন, “গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে জাতি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে। এই আওয়ামী লীগ ১৯৭৫ সালের এই দিনে (২৫ জানুয়ারি) জনগণের সব আশা-আকাঙ্খাকে ধোঁকা দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিল”।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, আওয়ামী লীগ কেন ভুলে যায় যে তারা প্রথমে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে সব দল ও সংবাদপত্র নিষিদ্ধ করে দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছিল।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লীগ কখনই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না এবং ভিন্নমতকে সহ্য করতে পারে না।… তাদের ইতিহাস সন্ত্রাসের ইতিহাস এবং তারা সর্বদা শক্তি প্রয়োগ করে এবং সন্ত্রাসবাদের আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চায়”।’

বর্তমান আন্দোলনে বিএনপির ১৭ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসার জঘন্য আকাঙ্খা চরিতার্থ করতে এত প্রাণ হরণ করেছে”।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় ও ইউটিলিটি সেবার দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় মানুষ খুবই কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন”।

বিএনপি নেতা বলেন, “সরকার বিদ্যুৎ-গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক কমাবে না। সুতরাং, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য এই শাসনকে অবশ্যই ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে”।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে অত্যন্ত সম্মান করি, ব্যক্তি যেই হোক না কেন এবং তিনি যে দলেরই হোন না কেন। রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপ্রধান।… কিন্তু রাষ্ট্রপতি এখন নিরপেক্ষভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারেন না এবং প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করতে পারেন না। তাই আমরা আমাদের ২৭ দফা প্রস্তাবে স্পষ্ট করেছি যে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য থাকতে হবে”।

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ আরও কয়েকজন নেতা বক্তব্য দেন।

XS
SM
MD
LG