বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষে কাতারে ২০১০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে হোটেল, স্টেডিয়াম ও আনুষঙ্গিক স্থাপনা নির্মাণের কাজ করতে গিয়ে নিহত ও আহত বাংলাদেশি শ্রমিকদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণলায় এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে এই তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাসুদ আর সোবহানের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
এছাড়া, কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনকে কেন্দ্র করে মানবেতর পরিস্থিতে কাজ করতে গিয়ে যদি বাংলাদেশের সাড়ে চারশ’ শ্রমিকের মৃত্যু হয়ে থাকে, তাহলে কেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
পররাষ্ট্র সচিব, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাস, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন প্রধান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার বাংলাদেশ অফিস, ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ফিফা), কাতারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (ইন্টেরিয়র), কাতারের শ্রমমন্ত্রীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মাসুদ আর সোবহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
এর আগে কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনকে কেন্দ্র করে মানবেতর পরিস্থিতিতে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশের অন্তত ৪৫০ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে দাবি করে, ঐ শ্রমিকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। বিবিসি, সিএনএন, গার্ডিয়ানসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাতার বিশ্বকাপে শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন রিট আবেদনে সংযুক্ত করা হয়।
রিট আবেদনে সংযুক্ত করা বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১০ বছর আগে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পাওয়ার পর, এর প্রস্তুতিতে সেখানে দক্ষিণ এশিয়ার সাড়ে ছয় হাজারের বেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এসব প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বিশ্বকাপ আয়োজনের গৌরব অর্জনের পর থেকে কাতারে প্রতি সপ্তাহে গড়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ১২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
