অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাগেরহাটে জুট মিল থেকে ১১৮৯ মেট্রিক টন সরকারি চাল জব্দ


বাংলাদেশেল বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটে, একটি জুট মিলে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে এক হাজার ১৮৯ মেট্রিকটন সরকারি চাল জব্দ করেছে। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উপজেলার লখপুর খাজুড়া এলাকায় এম এম জুট মিলে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযান চলাকালে চালবোঝাই মিলটি সিলগালা করা হয়। এছাড়া, মিলের সহকারী ম্যানেজার অলোক চক্রবর্তীকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবাইয়া বিনতে কাশেম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান এবং খুলনা র‌্যাব-৬ এর সদর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার বদরুদ্দোজা।

রুবাইয়া বিনতে কাশেম বলেন, “খবরের ভিত্তিতে ঐ জুট মিলে ভ্রাম্যমাণ আদলাত অভিযান পরিচালনা করে। বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় চাল জব্দ করে মিলটি সীলগালা করা হয়েছে। একই সঙ্গে কৃষি বিপণন আইনে মিলের সহকারী ম্যানেজারকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।”

বাগেরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান জানান, “জুট মিলের গুদামে সরকারিভাবে আমদানি করা চাল মজুত করে রাখা হয়েছে। মিলের কর্মকর্তাদের দাবি করছে সরকারিভাবে বাতিল করা এক হাজার ১৮৯ মেট্রিকটন চাল এখানে রাখা হয়। তবে, কৃষি বিপণন বিভাগ ধারণা করছে এই মিলে কম-বেশি ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল মজুত রয়েছে। মজুত করা অধিকাংশ চাল খাবারের উপযোগী। জব্দ করা চালের বিষয়ে সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

খুলনা র‌্যাব-৬ এর সদর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার বদরুদ্দোজা জানান, “খবর পেয়ে র‌্যাব ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অংশ নেয়। জুট মিলের মধ্যে হাজার হাজার বস্তায় চাল মজুত করে রাখা হয়েছে। নষ্ট চালের কথা বলা হলেও, এখানে খাবার উপযোগী অনেক চাল পাওয়া গেছে।”

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র‌্যাব

উল্লেখ্য, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র‍্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত। এতে বলা হয়েছে যে, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র‍্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র‍্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।

XS
SM
MD
LG