অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

জলাভূমি পুনরুদ্ধারে জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জাতিসংঘের


উপকূলীয় ও মিঠা পানির জলাভূমি উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতির ৪০ শতাংশের অবাসস্থল। জলবায়ু পরিবর্তন এবং অবকাঠামোর উন্নয়নের কারণে এই জলাভূমির দূষণ বাড়ছে এবং এগুলোর ক্রমাবনতি হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব জলাভূমি দিবসে, জাতিসংঘ এই বাস্তুতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত ও পুনরুদ্ধার করার জন্য জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। উল্লেখ্য, জলাভূমি বনের চেয়ে তিনগুণ দ্রুততায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

জলাভূমি ভূপৃষ্ঠের প্রায় ছয় শতাংশ জুড়ে রয়েছে। মানুষের স্বাস্থ্য, খাদ্য সরবরাহ, পর্যটন এবং চাকরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জলাভূমি। বিশ্বব্যাপী একশ’ কোটিরও বেশি মানুষ তাদের জীবিকার জন্য জলাভূমির ওপর নির্ভর করে। অগভীর জল এবং প্রচুর উদ্ভিদে ভরা জলাভূমি পোকামাকড় থেকে হাঁস, হরিণ এবং আরও অনেক প্রজাতিকে খাদ্য দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে।

টেকসই উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই; উভয় ক্ষেত্রেই জলাভূমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উদাহরণস্বরূপ, এই জলাভূমি পানি নিয়ন্ত্রণ এবং বন্যার প্রভাব কমানোর মতো প্রয়োজনীয় বাস্তুতন্ত্র পরিষেবা দিচ্ছে। এছাড়া, পিটল্যান্ড, একটি বিশেষ ধরনের উদ্ভিজ্জ জলাভূমি, বনের তুলনায় দ্বিগুণ কার্বন সঞ্চয় করে।

ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনইপি) অনুসারে, গত ২০০ বছরে কৃষিজমি বা অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য জলাভূমি নিষ্কাশন করা হয়েছে। ১৯৭০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী জলাভূমির প্রায় ৩৫ শতাংশ অদৃশ্য হয়ে গেছে এবং ২০০০ সাল থেকে ক্ষতির হার ত্বরান্বিত হয়েছে।

ইউএনইপি বলেছে, জলবায়ু-সম্পর্কিত সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির পরিমাণের ওপর নির্ভর করে, বর্তমান উপকূলীয় জলাভূমির ২০ থেকে ৯০ শতাংশ এই শতাব্দীর শেষে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এছাড়া অন্যান্য ভূমি এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের তুলনায় জলাভূমিগুলো বেশি মাত্রায় জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

ইউএনইপি’র মেরিন অ্যান্ড ফ্রেশওয়াটার শাখার প্রধান লেটিসিয়া কারভালহো সংশ্লিষ্ট সরকারকে এমন নীতি এবং ভর্তুকি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন, যা বন উজাড় এবং জলাভূমির অবক্ষয়কে উৎসাহিত করে। এর পাশাপাশি তিনি জরুরী ভিত্তিতে জলাভূমি পুনরুদ্ধারের দিকে মনোনিবেশের আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, “একই সময়ে, পিটল্যান্ডের মতো অগ্রাধিকারমূলক বাস্তুতন্ত্র রক্ষার জন্য আমাদের অবশ্যই বিনিয়োগের নির্দেশনা দিতে হবে ও কার্য পরিচালনা করতে হবে।”

গত ডিসেম্বরে, জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্য সম্মেলনে দেশগুলো ২০৩০ সালের মধ্যে এই গ্রহের ভূমি, উপকূলীয় অঞ্চল এবং অভ্যন্তরীণ পানির এক তৃতীয়াংশ রক্ষার জন্য একটি যুগান্তকারী চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। জলাভূমি পুনরুদ্ধারের পদক্ষেপ সারা বিশ্বে গতিশীল হচ্ছে।

XS
SM
MD
LG