অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশের আইসিটি খাতে অংশীদারিত্ব গড়তে সৌদি আরবের আগ্রহ প্রকাশ


বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের দক্ষতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। আর, বাংলাদেশের সঙ্গে এ খাতে সহযোগিতার জন্য দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চায় দেশটি। সৌদি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স কোম্পানি (এসসিএআই) এর প্রধান নির্বাহী আয়মান আল রাশেদ তাদের এই আগ্রহের কথা জানান।

রিয়াদে রবিবার(৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে, বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে এক বৈঠককালে তিনি এ আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে অংশীদারিত্বের জন্য সৌদি আরবকে স্বাগত জানান।

বৈঠকে জুনাইদ আহমেদ জানান, “বাংলাদেশ বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স নিয়ে কাজ করছে। আইসিটি সেক্টর বাংলাদেশের জন্য একটি বিকাশমান সেক্টর। ২০০৮ সালে বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা গ্রহণ করে, যার মূল বিষয়গুলো হচ্ছে; একটি উন্নত দেশ, একটি সমৃদ্ধ ডিজিটাল সমাজ, আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থা ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি।”

প্রতিমন্ত্রী পলক এসসিএআই-এর প্রধান নির্বাহীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। এছাড়া, রিয়াদে ডিজিটাল কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন – ডিসিও আয়োজিত এক সেমিনারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ডিজিটাল অর্থনীতির টেকসই প্রবৃদ্ধি বিষয়ে বক্তব্য দেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ই-কমার্সের বাজারের আকার ২০২৫ সালের মধ্যে ৩১০ কোটি ডলার হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বাংলাদেশে প্রতিদিন মোবাইল আর্থিক পরিষেবা ব্যবহারকারীরা অন্তত ২০ কোটি ডলারের লেনদেন করছেন।”

প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, “বাংলাদেশ ক্যাশলেস অর্থাৎ নগদবিহীন অর্থনীতি গড়ে তোলার পথে রয়েছে এবং ডিজিটাল ফাইন্যান্স সেক্টরে লেনদেন সহজ করতে, বাংলাদেশ সরকার বিনিময় অ্যাপ্লিকেশন চালু করেছে। বাংলাদেশ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তার মূল স্তম্ভ হলো, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সমাজ এবং স্মার্ট ইকোনমি।”

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “আমরা ২০১৫ সাল থেকে বিভিন্ন স্টার্টআপে বিনিয়োগে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। আমাদের নিজস্ব ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে প্রতিশ্রুতিশীল স্টার্টআপে বিনিয়োগ প্রদান করছি। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় আড়াই হাজার স্টার্টআপ রয়েছে, যেখানে গত ৫ বছরে প্রায় ৮০ কোটি ডলার বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে। বিভিন্ন স্টার্টআপ ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে প্রায় ১৫ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। এ সব প্রতিষ্ঠান ২০২৫ সালের মধ্যে আমাদের জিডিপিতে দুই শতাংশের বেশি অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।”

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন যে জনসেবাকে প্রযুক্তির মাধ্যমে সহজলভ্য করার লক্ষ্যে, বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন কর্মুসূচি বাস্তবায়ন করছে। তিনি জানান, সকলের জন্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে, সারা দেশে আট হাজারের অধিক এবং সৌদি আরবে ২২টি ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এগুলো থেকে প্রতি মাসে প্রায় এক কোটি নাগরিককে সেবা প্রদান করা হয়। সারা দেশে ৪র্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়েছে এবং ইউনিয়ন স্তর পর্যন্ত উচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হয়েছে।

এর আগে রবিবার বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সৌদি আরবের রিয়াদ পৌঁছালে, সৌদি আইসিটির ভাইস মিনিস্টার হাইথাম আলওহলি ও সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী তাকে স্বাগত জানান।

XS
SM
MD
LG