অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়াদের সন্ধান —মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে


তুরস্কের সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা হাতায় এলাকার ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১০ বছর বয়সী মেয়ে কুবরাকে উদ্ধার করেছে। ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
তুরস্কের সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা হাতায় এলাকার ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১০ বছর বয়সী মেয়ে কুবরাকে উদ্ধার করেছে। ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা জীবিতদের খুঁজে বের করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। বুধবারও (৮ ফেব্রুয়ারি) ঠান্ডাসহ নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যান।

তুরস্কের জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা বুধবার জানিয়েছে, উদ্ধার অভিযানে ৯৬ হাজার কর্মী অংশ নিয়েছেন।

যেসব স্থানে উদ্ধার অভিযান চলছে সেখানে লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন। কেউ জীবিত উদ্ধার হলেই উল্লাসে মেতে উঠছেন জনতা। সাথে সাথেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চিকিৎসার জন্য।

তুরস্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত সোমবারের ভূমিকেম্প কমপক্ষে ৬ হাজার ৯৫৭ জন নিহত ও ৩৮ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন।

এদিকে দামেস্ক ও উদ্ধারকারী দলগুলোর তথ্য অনুযায়ী, সিরিয়ায় কমপক্ষে ২ হাজার ৪৭০ জন নিহত হয়েছেন।

জাপানে ২০১১ সালের ভূমিকম্প ও সুনামির পর এটিই বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প। জাপানের ওই ভূমিকম্প ও সুনামিতে প্রায় ২০ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়।

সোমবার ভোরে হওয়া ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত সংলগ্ন গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে পাজারসিক এলাকা। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বুধবার ওই এলাকা পরিদর্শন করেন।

এরদোয়ান এ ভূমিকম্পকে “বিশ্বে অনন্য” বলে বর্ণনা করেছেন এবং গৃহহীনদের জন্য ১০ হাজার কনটেইনার বাড়ি দেওয়ার জন্য কাতারকে ধন্যবাদ জানান।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে জীবিতদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন। সাহায্যের জন্য চিৎকার করা কিছু কণ্ঠস্বর ইতোমধ্যে নীরব হয়ে গিয়েছে।

তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতাই জানিয়েছেন, শুধু তুরস্কেই ধ্বংসস্তূপ থেকে ৮ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষ সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র বা হোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে শপিং সেন্টার , স্টেডিয়াম, মসজিদ এবং কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেকে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন।

এদিকে, তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইজমিরের বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য একটি পোশাক দান অভিযানের আয়োজন করেছেন।

এমরে ডেমিরপোলাত নামে একজন ভয়েস অফ আমেরিকার তুর্কি সার্ভিসকে বলেন, “আমরা কম্বল ও হিটার নিয়ে এসেছি। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ... এমন দুঃসময়ে আমাদের একে অপরকে সমর্থন করতে হবে। যখন আমরা এই ঠান্ডায় ১০ মিনিটের জন্য বাইরে থাকতে পারছি না, সেখানে লোকেরা ঠান্ডায় তাদের ঘরবাড়ি হারানোর কথা চিন্তা করে এবং কখন তারা উষ্ণ জায়গায় যেতে পারবে তা ভেবে কাঁপছে”।

তুরস্ক বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকম্প অঞ্চলের মধ্যে একটি।

১৯৯৯ সালে তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ডুজসের কাছে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পে ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।

ভয়েস অব আমেরিকার তুর্কি ও সোমালি সার্ভিস এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছে।

এই প্রতিবেদনের জন্য কিছু তথ্য এপি, এএফপি এবং রয়টার্স থেকে নেওয়া হয়েছে।

XS
SM
MD
LG