অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি হলে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য গতি পাবে: ভুটানের রাষ্ট্রদূত


ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিচেন কুইনস্টুল
ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিচেন কুইনস্টুল

ভারতের সঙ্গে ট্রনজিট সমস্যা, সমাধানের দৌড়গোড়ায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিচেন কুইনস্টুল। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর পরিদর্শনে এসে একথা ভুটানের রাষ্ট্রদূত। তিনি জানান, “ইতোমধ্যে ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট নিয়ে একাধিক আলোচনা হয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে। এতে ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। এছাড়া, ভারত-ভুটান ট্রানজিট চুক্তি কার্যকর হলে, গতি পাবে শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর।”

সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পর সবচেয়ে কাছাকাছি ভৌগোলিক অবস্থান বাংলাদেশ ও ভুটানের। স্থলপথে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সঙ্গে শেরপুর জেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দর হয়ে ভুটানের রাজধানী থিম্পুর দুরত্ব ৪০০ কিলোমিটার।বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির আগ্রহ রয়েছে। আর, এমন কাছাকাছি দুরত্বের হলেও, ভারতের সঙ্গে ভুটানের ট্রানজিট সমস্যার কারণে স্থলপথে বাংলাদেশ-ভুটান বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগুচ্ছে না।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দরসহ ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার গোবরাকুড়া ও কড়ইতলী স্থলবন্দর দিয়ে গার্মেন্টস পণ্য নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে ভুটান। সেই চুক্তির অংশ হিসেবে, সোমবার দুপুরে ভূটানের রাষ্টদূত রিচেন কুইনস্টুল শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দর পরিদর্শনে আসেন।

এসময় রাষ্ট্রদূত ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের কোন বৈরিতা নেই বলে জানান। এখন শুধু ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি অনুমোদন হলেই গার্মেন্টস পণ্য সহ অন্যান্য পণ্য ভুটান আমদানি করতে পারবে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত রিচেন কুইনস্টুল। বন্দর পরিদর্শন শেষে ভুটানের রাষ্ট্রদূত স্থানীয় আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকে বাংলাদেশি ব্যাবসায়ীরা ভুটান থেকে পণ্য আমদানি ছাড়াও, বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস পণ্যের পাশাপাশি শুটকি মাছ ও প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এ সময় বাংলাদেশের কাস্টমস কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী, ভুটান দূতাবাসের মিনিস্টার কাউন্সেলর (ট্রেড) কেনচো থাইলো উপস্থিত ছিলেন।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভুটান রাষ্ট্রদূত বলেন, “ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক-বাণিজ্য বিষয়ে বেশকিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ভুটান থেকে ১৮টি পণ্য আমাদানি করার অনুমতি আছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে ১০টি পণ্য ভুটানে যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ এবং ভুটান বন্ধু দেশ। এছাড়াও আমরা চেষ্টা করছি এই দুই দেশের আমদানি-রপ্তানি হওয়া সকল পণ্য যেন শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়।” তিনি জানান, “নাকুগাঁও স্থলবন্দর নিয়ে ভুটানের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। এ বন্দর ব্যবহার করে ট্রানজিট চুক্তি কার্যকর হলে বন্দরের গতিশীলতা অনেক বাড়বে।”

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত সোনাম এল রাবগী শেরপুরের নালিতাবাড়ীর নাকুগাঁও স্থলবন্দর পরিদর্শন করেছিলেন।

XS
SM
MD
LG