বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস)-এর মাধ্যমে গড় দৈনিক লেনদেন তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে এবং এই পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। বাংলাদেশের ১৩টি এমএফএস প্রতিষ্ঠানের তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে সুবিধাজনক লেনদেনের সুযোগ এবং অর্থ প্রদানের সুবিধার কারণে এমএফএস বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ১৩টি পরিষেবা প্রদানকারীর তথ্যসহ এমএফএস-এর হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গ্রাহকরা এক লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা লেনদেন করেছেন। এই অংক এখন পর্যন্ত এই মাধ্যমে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড লেনদেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে কোনো ফি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে সব জায়গায় টাকা পাঠানো যাবে। একই সঙ্গে কেনাকাটার বিল পরিশোধ, ঋণ সুবিধা সহ অনেক নতুন সেবা যুক্ত করা হয়েছে। এগুলো ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এমএফএস-এর মাধ্যমে রেমিট্যান্সও আসছে। ফলে এমএফএস এর প্রতি মানুষের আগ্রহ ও নির্ভরতা বাড়ছে। এই পরিষেবার বহুমুখী ব্যবহারের কারণে গ্রাহকের সঙ্গে লেনদেনের পরিমাণ বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, মোবাইল ফাইন্যান্স অপারেটর ‘নগদ’ ছাড়াই জানুয়ারিতে এমএফএস-এর মাধ্যমে গড়ে দৈনিক লেনদেন ছিলো তিন হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। নগদ এখনো এমএফএস প্রদানকারী হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদনের অধীনে অন্তর্ভুক্ত নয়। যদি নগদ-এর লেনদেন যোগ করা হয়, তাহলে এমএফএস-এর দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ চার হাজার ২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লেনদেনের ৬০ শতাংশই অর্থ জমা এবং উত্তোলন ছিলো এবং ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ডিজিটাল পেমেন্ট ছিলো ৪০ শতাংশ। বাংলাদেশে এখন ১৩টি ব্যাংক; বিকাশ, রকেট, ইউ-ক্যাশ, মাই-ক্যাশ এবং শিওর-ক্যাশ সহ বিভিন্ন নামে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা প্রদান করছে। চলতি বছরের জানুয়ারির শেষে, মোবাইল ব্যাংকিং-এ নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ কোটি ৪১ লাখ। জানুয়ারি পর্যন্ত মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট সংখ্যা ছিলো ১৫ লাখ ৬৯ হাজার।
