অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতে স্বর্ণপদক জয়ী আফগান শিক্ষার্থী আফগান নারীদের প্রতি তার পদক উৎসর্গ করলেন


রাজিয়া মুরাদি ভারতের ভীর নরমাদ সাউথ গুজরাট ইউনিভার্সিটিতে লোক প্রশাসনে স্নাতকোত্তর কোর্সে কৃতিত্বের জন্য স্বর্ণপদক পেয়েছেন। (ছবি কৃতজ্ঞতা: রাজিয়া মুরাদি)

২৭ বছর বয়সী আফগান ছাত্রী রাজিয়া মুরাদি যখন ভারতের একটি কলেজে মাস্টার্স প্রোগ্রামে তার পারফরম্যান্সের জন্য স্বর্ণপদক জেতেন, তখন তার ভাবনা ঘিরে ছিল তাঁর মাতৃভূমি।

আফগানিস্তানের বামিয়ান প্রদেশে বড় হয়েছেন তিনি। ভবিষ্যত আশাব্যঞ্জক বলে মনে হয়েছিল তার। তিনি দিনে কাজ করতেন এবং স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করার জন্য নাইট স্কুলে যেতেন।

মুরাদি বলেন, “জীবন শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক ছিল"।

তিনি বলেন, "নারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারত। মেয়েরা শিখতে আগ্রহী ছিল। পরিবারগুলিও মেয়েদের উচ্চশিক্ষাগ্রহণের জন্য সমর্থন করেছে এবং উত্সাহিত করেছে"।

দুই বছর আগে জনপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর কোর্সের জন্য স্কলারশিপ নিয়ে ভারতে আসেন তিনি। ২০০১ সালে তালেবানের পতনের পর গত দুই দশকে হাজার হাজার আফগান নাগরিক ভারতীয় কলেজে ভর্তি হয়েছেন।

এই তরুণ ছাত্রদের অনেকের মতো, তার লক্ষ্য ছিল ফিরে আসা এবং নীতি নির্ধারণে তার ডিগ্রিটি চাকরি এবং আফগানিস্তানের আধুনিকীকরণে সহায়তা করার জন্য ব্যবহার করা।

২০২১ সালের আগস্টে তালিবানরা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার পর হঠাৎ করেই সবকিছু পাল্টে যায়। অনেক নারীর মতো, তিনিও ভয় পেয়েছিলেন, দেশটি আবারও সেই অন্ধকার দিনগুলিতে ফিরে যাবে।

তিনি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “আমি এই অর্জন সেই সব নারীদের উৎসর্গ করছি, যাদের পড়াশোনার সুযোগ নেই। আমার মতো মেয়েরা এই সুযোগটি তাদের কাছে ফিরিয়ে দিতে চায়। এই মেডেল প্রমাণ করে, নারীরা যে কোনও কিছু অর্জন করতে পারেন।“

মুরাদি বলেন, তিনি নিজেকে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত আফগানিস্তানের নারীদের প্রতিনিধি হিসেবে দেখেন।

গত ডিসেম্বরে তালিবান নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ করে, যা নারী শিক্ষার ওপর দ্বিতীয়বার আঘাত হানে।

মুরাদি এখন একই কলেজ থেকে ভারত সরকারের ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ কালচারাল রিলেশনসের বৃত্তির সহায়তায় জনপ্রশাসনে পিএইচডি করছেন।

তালিবানের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমি মনে করি তালিবানের নারীদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা উচিত। তারা যদি শাসন করতে চায় তবে তারা নারীদের উপেক্ষা করতে পারে না। নারীরা প্রতিবাদ করবে, কোনো এক সময় তারা রুখে দাঁড়াবে এবং অধিকার চাইবে। তা না হলে দেশের অর্ধেক মানুষ অকেজো হয়ে পড়বে"।

XS
SM
MD
LG