অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্প


পাকিস্তানের ইসলামাবাদে ভূমিকম্পের পর একটি মলের বাইরে জড়ো হচ্ছে লোকজন। ২১ মার্চ, ২০২৩।
পাকিস্তানের ইসলামাবাদে ভূমিকম্পের পর একটি মলের বাইরে জড়ো হচ্ছে লোকজন। ২১ মার্চ, ২০২৩।

মঙ্গলবার একটি ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বেশিরভাগ অংশ কেঁপে ওঠে। এতে আতঙ্কিত বাসিন্দাদের তাদের বাড়িঘর ও অফিস ছেড়ে পালিয়ে যান এবং এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামেও মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। ভূমিকম্পে অন্তত দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।

পাকিস্তানের জরুরি পরিষেবার মুখপাত্র বিলাল ফাইজি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সোয়াত উপত্যকা অঞ্চলের হাসপাতালে ১০০ জনেরও বেশি লোককে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় আনা হয়েছে।"

ফাইজি বলেন, "এই আতঙ্কিত লোকেরা মুষড়ে পড়েছিল এবং ভূমিকম্পের ধাক্কায় তাদের মধ্যে কেউ কেউ ভেঙে পড়েছিল। পরে বেশিরভাগকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়”।

ফাইজি বলেন, পালাতে থাকা লোকেদের ভিড়ে পদদলিত হয়ে মারা যাওয়া একজন মেয়ে এবং ছাদ ধসে একজন লোকসহ, মোট দুইজন মারা গেছে। অন্যদিকে, আফগানিস্তানে কেন্দ্রীভূত এবং তাজিকিস্তানের সীমান্তে অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পে আরও ১২ জন আহত হয়েছে।

উত্তর-পশ্চিমে প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র তৈমুর খান বলেছেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেশ কিছু মাটির ইটের বাড়ি ধসে পড়েছে।

তিনি বলেন, “আমরা এখনও ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করছি।”

কাবুল এবং আফগানিস্তানের অন্যান্য অংশেও একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।

কাবুলের বাসিন্দা শফিউল্লাহ আজিমি বলেন, "ভূমিকম্পটি এতটাই শক্তিশালী এবং ভয়ঙ্কর ছিল, আমরা ভেবেছিলাম আমাদের উপর বাড়িঘর ভেঙে পড়ছে, লোকেরা সবাই চিৎকার করছিল এবং হতবাক হয়ে গিয়েছিল।"

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ জানিয়েছে, ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল পাকিস্তান ও তাজিকিস্তানের সীমান্তবর্তী আফগানিস্তানের পাহাড়ি হিন্দুকুশ অঞ্চলের জুর্ম থেকে ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে। এতে বলা হয়, ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ১৮৭.৬ কিলোমিটার।

রখশিন্দা তৌসিদ নামে একজন চিকিত্সক বলেছেন, ভূমিকম্পের সময় তিনি পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের লাহোর শহরে তার হাসপাতালে ছিলেন।"

তিনি বলেন, "আমি দ্রুত রোগীদের নিরাপদ জায়গায় যেতে বলেছি।"

পাকিস্তানের গ্যারিসন শহর রাওয়ালপিন্ডির বাসিন্দা খুররম শাহজাদ বলেছেন যে তিনি তার পরিবারের সাথে একটি রেস্তোরাঁয় নৈশভোজ করছিলেন যখন দেয়াল দুলতে শুরু করে।

আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারেও একই অবস্থা ছিল। সেখানে লোকজনকে তাদের বাড়ি এবং অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এক বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাদের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সতর্ক থাকতে বলেছেন।

আফগানিস্তানে তালিবান সরকারের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ টুইট করে বলেছেন, জনস্বাস্থ্য মন্ত্রক সমস্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

অঞ্চলটি মারাত্মক ভূমিকম্পপ্রবণ একটি অঞ্চল। ২০০৫ সালে একটি ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে পাকিস্তান ও কাশ্মীরে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়।

XS
SM
MD
LG