বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার একটি স্কুলে দশ জোড়া যমজ ভাইবোন পড়াশোনা করছে। এরা সকলেই জেলার সদর উপজেলায় মথুরাপুর পাবলিক হাই স্কুলের শিক্ষার্থী। স্কুলটি ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে তাহসিন-তাসনিম ও সান-মুন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে কার্তিক-গণেশ, হাবিব-হাফিজ ও সুমাইয়া-সাদিয়া, অষ্টম শ্রেণিতে শুভ-সৌরভ, নবম শ্রেণিতে হাসি-খুশি ও তাহবি-তাসবি এবং দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে আবিদ-অমিত ও রাহুল রাহা-চঞ্চল রাহা।
যমজ ভাইবোনদের চেহারায় মিল থাকায় স্কুলের শিক্ষকরা প্রায়শই দ্বিধায় পড়েন। তবে, দু’জন একসঙ্গে বেড়ে ওঠাকে বেশ গর্বের সঙ্গে দেখছেন শিক্ষকরা। যমজ ভাইবোনরাও আনন্দের সঙ্গে বিদ্যাভ্যাস করছে।
ষষ্ঠ শ্রেণির যমজ দুই ভাই সান ও মুন জানায়, “আমরা দুই ভাই একসঙ্গে সব কাজ করি। খাওয়া, খেলাধুলা ও স্কুলে আসা-যাওয়া করি৷ আমাদের দু’জনের পছন্দ মাংস-ভাত৷ শুধু দু’জনের দুই রঙ পছন্দ। একজনের লাল আরেকজনের নীল।”
তারা আরো জানায়, “আমরা একই পোশাক পরে বিভিন্ন জায়গায় যাই। শুধু পোশাক নয়, আমাদের জুতা, চশমা, সব এক রকম। এতে আমাদের খুব ভালো লাগে। তবে অনেকেই বুঝতে পারে না কে সান আর কে মুন, তখন আমাদের হাসি পায়। আমরা খুব মজা পাই।”
সপ্তম শ্রেণির যমজ দুই বোন সুমাইয়া ও সাদিয়া জানায়, “আমাদের সব কাজ আমরা একসঙ্গে করি। আমাদের দুজনের প্রিয় রঙ নীল। আমরা একসঙ্গে স্কুলে আসি। একসঙ্গে ক্লাসে বসি। একসঙ্গে খেলাধুলা করে থাকি। সব কাজগুলো আমরা একসঙ্গে করি। ক্লাসে স্যার একজনকে বকা দিলে অন্যজনের খুব খারাপ লাগে। স্কুলের শিক্ষক ও সহপাঠীরা আমাদের আলাদাভাবে চিনতে পারে না।”
নবম শ্রেণির যমজ দুই বোন হাসি ও খুশি বলেছে, “আমাদের একটা বড় সুবিধা হলো কেউ কোনো ভুল করলে আরেকজনকে চাপিয়ে দেয়া যায়, পরে আবার আমরা একসঙ্গে মিলে যাই। আর পরিবারের কাছে, আত্মীয় স্বজনদের কাছে ও শিক্ষকদের কাছেও আমরা বেশ আদর পাই। আমরা পুরো সময় একসঙ্গে কাটাই। আমরা জমজ হয়ে অনেক খুশি।”
মথুরাপুর পাবলিক হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, “আমাদের স্কুলে ২০ জন যমজ ভাইবোন পড়ে। আমরা তাদের প্রতি যত্নশীল। ক্লাসে তাদের প্রত্যেকের মেধাক্রম কাছাকাছি। স্কুলের জন্য এটা গর্বের। আমরা তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি।”
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান যমজ শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জমজ ছাত্রছাত্রীদের ভালোভাবে দেখাশোনা ও লেখাপড়ার সকল সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানিয়েছি।”
