যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর এক মুখপাত্র শনিবার জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যে গাইডেড-মিসাইল উৎক্ষেপণে সক্ষম একটি ডুবোজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। এই ডুবোজাহাজ একসঙ্গে ১৫৪টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে পারে। এ বিষয়টিকে সাম্প্রতিক উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে ইরানের বিরুদ্ধে শক্তি-প্রদর্শন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনী সাধারণত তাদের ডুবোজাহাজের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা মোতায়েন সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে না। উপসাগরীয় দেশ বাহরাইনে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের ৫ম নৌবহরের মুখপাত্র কমান্ডার টিমোথি হকিন্স ডুবোজাহাজটির অভিযান বা কেন এই ডুবোজাহাজ মোতায়েন করা হলো, সে বিষয়ে কিছু জানাতে অস্বীকার করেন।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইসরাইল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানের বিরুদ্ধে তেলের ট্যাংকার ও বাণিজ্যিক জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করছে বলে অভিযোগ এনেছে। এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীও ইরানের বাহিনীর সঙ্গে সাগরে বেশ কয়েকবার উত্তেজনাপূর্ণ মুখোমুখি অবস্থানে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর ভাষায়, এগুলো ছিলো বেপরোয়া ও আক্রমণাত্মক।
জাহাজ বা ডুবোজাহাজ থেকে নিক্ষেপ করা টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সর্বাধিক আড়াই হাজার কিলোমিটার দুরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এই অস্ত্র ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীনে ইরাক হামলার শুরুর সময় খুব জনপ্রিয়ভাবে ব্যবহৃত হয়। পরে, ২০১৮ সালে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র হামলার জবাবে ব্যবহৃত হয় এই ক্ষেপণাস্ত্র।
তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালে বৈশ্বিক ক্ষমতাগুলোর সঙ্গে ইরান সংক্রান্ত ১টি চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের সম্পর্কের মধ্যে টানাপড়েন বাড়ে। এই চুক্তির শর্ত ছিলো ইরান তাদের পারমাণবিক কার্যক্রমের পরিসর কমাবে এবং দেশটিকে উচ্চ পর্যায়ের নজরদারিতে রাখা হবে। বিনিময়ে ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হবে।
বাইডেন প্রশাসন এই সচুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করলেও, গত বছর তা স্থিমিত হয়ে পড়ে। ইরান ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহ করায় এবং ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান মধ্যপ্রাচ্যে বছরব্যাপী ছায়া-যুদ্ধের তীব্রতা আরও বেড়ে যাওয়ায়, দুই দেশের মধ্যে উদ্বেগের মাত্রা আরো বেড়ে যায়।
মস্কোর সঙ্গে আরো নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি তেহরান চীনের সঙ্গেও ভাল সম্পর্ক গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে। ইরানের এই উদ্যোগের ফলে, গত মাসে চীন, ইরান ও সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ নেয়।